ধান-কাটার মরশুমে নয়াগ্রামে হাতির হামলা ঠেকাতে মরিয়া চেষ্টায় ছিল বন দফতর। আপাতত ‘কঠিন পরীক্ষায়’ উর্ত্তীণ হওয়া গিয়েছে। এলাকাবাসীর সাহায্য নিয়ে পালের সিংহ ভাগ হাতিকে ওড়িশায় খেদিয়ে দিয়েছে বন দফতর। তার ফলে নয়াগ্রাম ব্লক জুড়ে ধান-কাটার হিড়িক পড়ে গিয়েছে।
বছরের পর বছর এই সময় এসে ধান খেয়ে যায় হাতিরা। গত ২ নভেম্বর সুবর্ণরেখা পেরিয়ে হাতিরা নয়াগ্রামে ঢুকেছিল। এরপর নয়াগ্রামের পাতিনা, চাঁদাবিলা ও বড়খাঁকড়ি এই তিনটি অঞ্চলের ১৫-২০টি গ্রামের ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি করে হাতিরা। ১১০টি হাতির পালে শাবকের সংখ্যা ১৮টি। এর মধ্যে দু’সপ্তাহ আগে নয়াগ্রামের পাথরডহরার জঙ্গলে একটি হস্তিনী শাবক প্রসব করতে চলেছে বলে রটেছিল। পালে নবজাতক থাকলে হাতিরা সহজে এলাকা ছেড়ে যেতে চায় না। ফলে হাতির পাল আরও কিছু দিন এলাকায় রয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আশঙ্কা অমূলক প্রমাণ করে হাতিরা ওড়ইশার দিকে রওনা দেওয়ায় চারিদিকে তাই স্বস্তির আবহ। খড়্গপুরের ডিএফও মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, “আপাতত এলাকায় হাতিরা না থাকায় কৃষিজীবীরা স্বস্তিতে রয়েছেন। এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় হাতিদের অন্যত্র পাঠানো গিয়েছে।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার পালের অধিকাংশ হাতিকে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ বন্যপ্রাণ বিভাগের অন্তর্গত বেতনটি রেঞ্জের জঙ্গলের দিকে পাঠানো হয়। এখন ওড়িশার জঙ্গলে রয়েছে ৭৪টি হাতি। বাকি হাতিগুলি অবশ্য দলছুট হয়ে নয়াগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে ছোট ছোট দলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে নয়াগ্রামের তপোবনে রয়েছে ৫টি, বালিচৌরিয়া জঙ্গলে রয়েছে ১৯টি হাতি। এ ছাড়া নয়াগ্রামের রাঙ্গিয়ামের জঙ্গলে রয়েছে ১২টি হাতি। নয়াগ্রামের জঙ্গলগুলিতে ছোট ছোট দলে থাকা ৩৬টি হাতি সে রকম ক্ষয়ক্ষতি করতে পারছে না বলেই বন দফতরের দাবি। নয়াগ্রামের ফরেস্ট-রেঞ্জ অফিসার অশোক সেনের যুক্তি, “ছোট ছোট দলে থাকায় হাতিরা বেশি ক্ষয়ক্ষতি করার সুযোগ পাচ্ছে না। তাছাড়া, কম সংখ্যক হাতি লোকালয়ে ঢুকে পড়লে সহজেই সেগুলিকে জঙ্গলের দিকে খেদানো যাচ্ছে।”
এই স্বস্তির মেয়াদ কতদিনের, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কারণ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওড়িশার দিক থেকেও হাতি খেদানোর তোড়জোড়া শুরু করেছে সেখানকার বন্যপ্রাণ শাখা। |