দিল্লি থেকে আগরতলা ফিরে প্রধামন্ত্রী মনমোহন সিংহের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তাঁর বক্তব্য, আর্থিক সঙ্কটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব সম্পূর্ণ ইতিবাচক। কার্যত রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট এবং তাঁর থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতেই প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন দেশের এক মাত্র বামশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরী।
মানিকবাবু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেন: উত্তর-পূর্ব সম্পর্কে আমরা সব সময়েই অন্য ভাবে ভাবি। আপনাদের আর্থিক দাবির পরিমাণও যথেষ্ট বেশি। তবে আপনাদের দাবি আমি বিবেচনা করব। অন্য বেশ কয়েকটি রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করছি। একই সঙ্গে আপনাদের বিষয়টিও আমি খতিয়ে দেখব।” মানিকবাবুর বক্তব্য, “তিনি আমাদের বক্তব্য যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে শোনেন। তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি। খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। আসলে আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর এই মনোভাবটাই যথেষ্ট ইতিবাচক।”
সাধারণ বামপন্থী ঢঙে প্রথমেই মানিকবাবু যে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার চিরাচরিত অভিযোগের পথে না হেঁটে, উল্টে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবকে ‘ইতিবাচক’ আখ্যা দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সিপিএম কি তবে নতুন করে মনমোহন ও কংগ্রেসের প্রতি নরম মনোভাব নিচ্ছে। এই জল্পনার অন্যতম কারণ, আজই মানিকবাবু এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক রাহুল গাঁধীর সাম্প্রতিক ত্রিপুরা সফর প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। তবে সেখানেও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে যাওয়া রাহুল সম্পর্কে মানিকবাবু যথেষ্টই নরম। কৈলাশহর এবং উদয়পুরের দু’টি রাজনৈতিক জনসভায় রাহুল রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, গরিব ও খেটেখাওয়া মানুষের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার কিছুই করছে না। ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে এই সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এ সম্পর্কে মানিকবাবুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি এর জন্য রাহুল গাঁধীকে কাঠগড়ায় তুলতে রাজি হননি। মানিকবাবুর বক্তব্য, “আমি ওঁকে দোষী বলতে রাজি নই। আসল দোষ যাঁরা ওঁকে এই ভুল তথ্য দিয়েছেন, তাঁদের।” প্রসঙ্গত, এর আগে রাহুল সম্পর্কেও আক্রমণাত্মক হয়েছে সিপিএম। কিন্তু এ বার এতখানি নরম মনোভাব নেওয়ার কারণ কী?
মানিকবাবু তাঁর দল সিপিএমের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক, পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। সেই কারণেই জল্পনা আরও তুঙ্গে। প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেস সম্পর্কে কি ফের মনোভাব পাল্টাচ্ছে সিপিএমের? |