টু-জি কাণ্ডে সিএজি-র তদন্তে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ নস্যাৎ করলেও অনেক প্রশ্নেরই যুৎসই জবাব দিতে পারলেন না পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান মুরলীমনোহর জোশী। ফলে কংগ্রেসের তোলা অভিযোগের সাফাই দিতে গিয়ে কার্যত আরও জালে জড়িয়ে গেলেন প্রবীণ এই বিজেপি নেতা।
সিএজি-র কর্তা আর বি সিংহের ফাঁস হওয়া চিঠিকে অস্ত্র করে গত কাল কংগ্রেস নেতারা অভিযোগ করেছিলেন, জোশী ফোন করে টু-জি তদন্তে প্রভাব খাটিয়েছেন। রিপোর্ট দ্রুত পেশ করার ব্যাপারে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি ফোনে এমন মন্তব্যও করেছেন, দেরি হলে সরকার তা ধামাচাপা দেওয়ার সুযোগ পাবে। আজ সেই চিঠির সাফাই দিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন জোশী। বলেন, “গত বছর জানুয়ারি মাসেই আর বি সিংহ চিঠি লিখে ছ’মাসের মধ্যে টু-জি তদন্তের রিপোর্ট দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। ছ’মাসের মাথায় রিপোর্টের ব্যাপারে ফোন করে খোঁজ নিয়েছি মাত্র। কংগ্রেস অহেতুক পিএসি ও সিএজি-র মতো সাংবিধানিক সংস্থাকে বদনাম করার জন্য প্রচার চালাচ্ছে।” সাংবিধানিক সংস্থার উপরে এ ভাবে আঘাত হানার অভিযোগ তুলে জোশী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে একটি চিঠিও লিখেছেন।
আত্মপক্ষ সমর্থনে জোশী সাফাই দিলেও দুটি প্রশ্নের যুৎসই জবাব দিতে পারেননি তিনি। প্রথমত, সিএজি কোনও রিপোর্ট চূড়ান্ত করলে সেটি অর্থ মন্ত্রকের মাধ্যমে সংসদে পেশ হয়। তার পরে সেই রিপোর্ট আসে পিএসি-র কাছে। জোশী বলতে পারেননি, কেন তার আগেই বেনজির ভাবে তিনি ফোন করে সরাসরি সিএজি-র এক অধস্তন কর্তাকে তাড়া দিচ্ছিলেন।
দুই, পিএসির প্রায় প্রতিটি বৈঠকেই সিএজি-র প্রধান বিনোদ রাই নিজে হাজির থাকেন। ফলে বিনোদ রাইকেই সরাসরি রিপোর্ট পেশের কথা বলা যেত। তা না করে কেন তিনি এক অধঃস্তন অফিসারকে ফোন করলেন, তারও জবাব নেই জোশীর কাছে।
জোশীর সাংবাদিক সম্মেলনের আগেই আজ সিএজির দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে বিনোদ রাইও জোশীর সমর্থনে বলেন, “টু-জি তদন্তে কোনও পক্ষ থেকেই কোনও চাপ আসেনি সিএজি-র উপর।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রণববাবু অবশ্য আজ সিএজি-র দফতরে দাঁড়িয়ে ওই সংস্থার প্রশংসাই করেছেন। তিনি বলেন, “সিএজি-র হিসাব পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় রাজস্ব ক্ষতির দিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে এবং রাজস্ব আদায় ও তার সমীক্ষা ব্যবস্থাতেও গলদ ধরা পড়েছে।” প্রণবের ভূমিকার অবশ্য তারিফ করেন জোশীও। তিনি বলেন, “যখন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি আক্রমণের মুখে, একের পর এক দুর্নীতি মাথাচাড়া দিচ্ছে, সেই সময় সিএজি-র মতো প্রতিষ্ঠানের সমর্থনে যে ভাবে প্রণব মুখোপাধ্যায় এগিয়ে এসেছেন, তা যথেষ্ট উৎসাহজনক।” |