|
|
|
|
বন্দিদের অনশন ছড়াচ্ছে, আশঙ্কায় প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
সমস্যা তো মিটছেই না। বরং নিত্য নতুন জেলে ছড়িয়ে পড়ছে বন্দিদের অনশন-আন্দোলন। আলিপুর, প্রেসিডেন্সির পরে দমদম সেন্ট্রাল জেলের বন্দিরাও বুধবার সকালে আমরণ অনশনে বসেছেন। তাতে যোগ দিয়েছেন ৭০ জন মহিলা কয়েদিও। দাবি সেই এক ‘দ্রুত মামলা সারো, কিংবা জামিন দাও।’
আর এতেই অশনি সঙ্কেত দেখছেন রাজ্যের কারাকর্তারা। ওঁদের আশঙ্কা, কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলার জেলগুলোতেও আন্দোলন ছড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে আইজি (কারা) রণবীরকুমার এ দিন কারাকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি বলেন, “অন্যান্য জেলকে হুঁশিয়ার করা হয়েছে।” আইজি এ দিন কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীকে পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট দেন।
আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে অনশনের ষষ্ঠ দিনে ৬০ জন বন্দি অসুস্থ হয়েছেন। আলিপুরের সুপার চিত্তরঞ্জন ঘড়াই জানান, জেল হাসপাতাল ছাড়াও বাইরের সরকারি হাসপাতালে কয়েক জনকে ভর্তি করা হয়েছে। প্রেসিডেন্সি জেলে আন্দোলনের চতুর্থ দিনে গুরুতর অসুস্থ ১০ কয়েদি। তাঁদেরও ক’জনকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে কারা দফতরে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন সুপার। দুই জেলে বিচারাধীনদের সমর্থনে মাওবাদী বন্দিরাও অনশন চালাচ্ছেন। আলিপুরে আটক প্রথম সারির মাওবাদী নেতা তেলুগু দীপক যাঁদের অন্যতম। আন্দোলনে সামিল পাকিস্তানি ও কাশ্মীরি জঙ্গি হিসেবে অভিযুক্তেরাও।
আলিপুর-প্রেসিডেন্সির মতো এদিন সকাল থেকে দমদম সেন্ট্রাল জেলে চারশো বন্দি আমরণ অনশনে বসেন। ৭০ জন বিচারাধীন মহিলা বন্দিও আছেন। ওই জেলে আটক চণ্ডী লাহিড়ী, সোমেন রায়, বাসুদেব দাসের মতো ৮ জন মাওবাদী বন্দিও অনশন করছেন বলে সুপার দেবাশিস মুখোপাধ্যায় আইজি-কে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। আইজি’র কথায়, “বারবার বুঝিয়েও বন্দিদের খাওয়ানো যাচ্ছে না! ওঁরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।”
রাজ্যের আইন ও বিচারমন্ত্রী মলয় ঘটক মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি এবং আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দিদের অনশন তোলার আবেদন জানান। তাতে কাজ হয়নি। এ দিন তিনি কারামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে কারামন্ত্রী শঙ্করবাবু বলেন, “দীর্ঘ দিন বিনা বিচারে আটকদের তালিকা এবং কত বছর তাঁরা আটক রয়েছেন, তা আইনমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। তিনি সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।”
আইনমন্ত্রী মলয়বাবু মহাকরণে বলেন, “যে ভাবে বিভিন্ন জেলে বন্দিদের অনশন ছড়াচ্ছে, তাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতেই হবে। আমরা সরকারি আইনজীবীদের বলেছি, বিচারাধীনদের মামলাগুলো ঠিক সময়ে আদালতে তোলা, সাক্ষীদের হাজির করানো ইত্যাদি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। ঢিলেমি চলবে না।” হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের সঙ্গেও এ দিন মলয়বাবুর আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, “হাইকোর্ট দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে রেজিস্ট্রার আমাকে জানিয়েছেন।” |
|
|
|
|
|