|
|
|
|
মহাকরণে অসহায় বৃদ্ধার কান্না থামল মমতারই ছোঁয়ায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
সরকারি কর্মচারীদের কাছ থেকে কোনও রকম সহায়তা না-পেয়ে বৃদ্ধা হাজির হয়েছিলেন মহাকরণে। শেষ পর্যন্ত আশ্বাস মিলল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। বুধবার দুপুর পৌনে ২টো। বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য মহাকরণ থেকে বিধানসভায় যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘর থেকে বেরোতেই হঠাৎ তাঁর নজরে আসে, এক বৃদ্ধা মেটাল ডিটেক্টরের পাশে ‘ওয়াকার’-এ ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। আর পুলিশকর্মীরা তাঁকে সাধারণ লিফট দিয়ে নীচে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেখতে পেয়েই ভিআইপি লিফটে না-উঠে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান সাধারণ লিফটের সামনে।
কাঁদছিলেনই। মুখ্যমন্ত্রীকে হাতের কাছে পেয়ে এ বার তাঁকে জড়িয়ে ধরেই কাঁদতে থাকেন বৃদ্ধা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, “কাঁদবেন না। সব ব্যবস্থা হবে।” তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকর্মীদের বলেন, “ওঁকে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর কাছে নিয়ে যান। আমি বলে দিচ্ছি।”
কে এই বৃদ্ধা? সত্তরোর্ধ্ব ওই মহিলা জানান, তাঁর নাম জ্যোৎস্না দত্ত। বাড়ি মহেশতলার বাটানগর এলাকার বাংলা হাইতপুরে। বছর তিনেক আগেই তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। ছেলেও দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম। বৃদ্ধা মহাকরণের অফিসারদের জানান, তাঁরা ভাড়া বাড়িতে থাকেন। দু’বেলা খাবার সংস্থানও নেই। কিন্তু বারবার আবেদন-নিবেদন করেও বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা কিছুই পাচ্ছেন না। কয়েক মাস আগে তাঁর ডান পা ভেঙে গিয়েছে। তাই ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না। তিনি বলেন, “এ দিন সকালে সাহায্যের আবেদন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিন্তু দেখা না-হওয়ায় কোনও রকমে মহাকরণে এসে পৌঁছেছি।” জ্যোৎস্নাদেবীকে এ দিন যখন শ্রমমন্ত্রীর ঘরে পাঠানো হয়, পূর্ণেন্দুবাবু সেই সময় বিধানসভায় ছিলেন। বিধায়ক হিসেবে মমতার শপথ অনুষ্ঠান সেরেই শ্রমমন্ত্রী মহাকরণে পৌঁছে যান। ইতিমধ্যেই ওই বৃদ্ধাকে তাঁদের ঘরে বসিয়ে চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করেন শ্রমমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব। পূর্ণেন্দুবাবু মহাকরণে পৌঁছেই বৃদ্ধাকে তাঁর ঘরে ডেকে নেন। পরে শ্রমমন্ত্রী বলেন, “জ্যোৎস্নাদেবী যাতে তাঁর প্রাপ্য ভাতা পান, তার ব্যবস্থা করতে ওই এলাকার পুরসভাকে অনুরোধ করেছি। উনি একটা সেলাই মেশিন চান। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তারও ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।” মুখ্যমন্ত্রী ও শ্রমমন্ত্রীর আন্তরিকতায় আপ্লুত জ্যোৎস্নাদেবী বলেন, “আশ্বাস যখন পেয়েছি, তখন ব্যবস্থা নিশ্চয়ই হবে।” বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ বাড়ি রওনা দেন তিনি। |
|
|
|
|
|