শিকেয় নাকছাবি শিল্প
ক্রেতা থেকে কারিগর, হাত পুড়ছে সোনায়
বিয়ের মরসুমের পড়তে না পড়তেই ফের আকাশ ছুঁয়েছে সোনার দাম। ক্রেতাদের পাশাপাশি সোনার ক্রমাগত এই দাম বাড়ায় মাথায় হাত পড়েছে গয়না বিক্রেতা এবং ছোট ব্যবসায়ীদেরও।
উৎসব আর বিয়ের এই মরশুমে সোনা এখন মধ্যবিত্তের প্রায় নাগালের বাইরে। বুধবার প্রতি ১০ গ্রাম গয়নার সোনা ২৮ হাজার ২০ টাকা। গত ২০ দিনে সোনার দাম এক লাফে বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার টাকা।
সেনার এই আকাশোছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিতে শুধু যে ক্রেতারাই সমস্যায় পড়েছেন তা নয়। ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে ছোট স্বর্ণ ব্যবসায়ী এবং কারিগরদেরও। বেলডাঙার সোনার বাজারের অনেক ব্যবসায়ী নিজেরাই গয়না তৈরি করেন। ছোট নাকছাবি থেকে চুরি, বাউটি থেকে হার, সবই গড়েন নিজেরা। বিশেষত নাকছাবির বিশেষ চাহিদা রয়েছে বেলডাঙার বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানালেন, এখানে তৈরি করা পাথর বসানো নাকছাবি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়।
সোনার ব্যবসায়ী সুব্রত কর বলেন, “আমরা অনেক সময়েই পুরনো গয়না ভেঙে নতুন গয়না তৈরি করি। এখন পুরনো সোনা প্রায় পাওয়াই যাচ্ছে না। সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন সোনা কিনতেও সমস্যা হচ্ছে। ১০-১৫ দিনে এরকম ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে সোনার দাম বাড়লে আমরা কী করব?”
বেলডাঙার পরিচিত সোনাপট্টির আর এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী নিমাই মণ্ডল বলেন, “প্রতি দিনই যদি সোনার দাম এ ভাবে বাড়ে তাহলে আমরা তো ভাতে মারা যাব! অনেক সময়েই ক্রেতারা দামের ফারাক না জেনেই সোনা কিনতে আসেন। আজকের দিনে সোনার যা দাম, কাল তা বেনে যাচ্ছে কখনও ৫০০ টাকা কখনও তারও বেশি। রাতারাতি এমন মূল্য বৃদ্ধিতে ছোট মাপের ক্রেতারা পিছিয়ে যাচ্ছেন। ফলে মার খাচ্ছি আমরা। আমরা তো ছোট কাজ করেই বেঁচে রয়েছি।”
বেলডাঙার বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সভাপতি কিরিটি কর্মকার বলেন, “আসলে ব্যবসায়ী ও শিল্পীরা সোনার দামের এই রকম নামা ওঠা আগে কখনও দেখেননি। সোনার এই আকাশছোঁয়া দামে আমাদের ছোট ব্যবসায়ীরাও সমস্যায় পড়ছেন। মাথায় হাত ক্রেতাদেরও। কী ভাবে সোনার দামের স্থিরতা আসবে কে জানে!”
সমিতির সদস্য ছোট কারিগর রতম মণ্ডলের কথায়, “গয়না তৈরিতে যে যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয় তার দামও বেড়েছে। কিন্তু মজার কথা কি জানেন, সোনার দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে, যন্ত্রাংশের দাম বাড়ছে, অথচ আমাদের মজুরি বাড়ছে না। সংসার চালাব কী করে?” সমিতি সূত্রেই জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগেও একটা ছোট নাকছাবি গড়তে যা মজুরি ছিল এখনও তাই রয়ে গিয়েছে। তা ছানা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সোনা কিনতে হয় বেলডাহা থেকে। কলকাতার বাজারের সহ্গে যার দামের তফাৎ প্রায় প্রায় ৬০০ তেকে ৭০০ টাকা। বিয়ের মরসুমে সোনার এই মূল্যবৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারাও। বেলডাঙার বাসিন্দা রামগোপাল বিশ্বাস বললেন, “সামনের মাঘে মেয়ের বিয়ে। সোনা কিনতে গিয়ে প্রতিবারই নতুন নতুন দাম শুনছি। গত ১৫ দিনেই তো দেড় দু’হাজার টাকার ফারাক হয়েছে। বাধ্য হয়েই চড়া দামে সোনা কিনতে হচ্ছে।” মেয়ের বিয়ের গয়না কিনতে এসে পরভিনা বেগম বলেন, “সাধারণ একটা চেনের মজুরি ২৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। তার সঙ্গে ১৫ গ্রাম সোনার দাম হাজার ৪২ এর কাছাকাছি। একটা সরু চেনের দামই তো তাহলে সব মিলিয়ে হাজার ৫০ টাকা। বিয়ে দেব কী করে!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.