ভাঁড়ে ভবানী, দু’টাকার চাল বন্ধ মেদিনীপুরে
রাজ্যের কোষাগারের হাল এমনই, গণবণ্টন ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। মাওবাদী প্রভাবিত, ‘পিছিয়ে পড়া’ যে জেলাতেই কি না আমলাশোল, সেখানে বিপিএল ও অন্ত্যোদয় যোজনার তালিকাভুক্ত গরিব মানুষ রেশনে চাল পাচ্ছেন না। কবে ফের পাবেন, সে নিয়ে স্পষ্ট কোনও আশ্বাসও দিতে পারছেন না জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। জেলা খাদ্য নিয়ামক প্রদীপ ঘোষের বক্তব্য, “সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” রাজ্যের কাছে অর্থও চেয়েছে জেলা খাদ্য দফতর।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় বিপিএল ও অন্ত্যোদয় যোজনার আওতায় থাকা মানুষের সংখ্যা ২৯ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৭৯ জন। যাঁদের ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁর দু’দফার জঙ্গলমহল সফরে ঘোষণা করেছিলেন, সকলের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করবে সরকার। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে জেলায় ২ টাকা কেজি দরে চালের ভাঁড়ারই এখন শূন্য। এ ক্ষেত্রে এফসিআই থেকে চাল কেনা হয়। কিন্তু চাল কিনতে হলে টাকার প্রয়োজন। সেই টাকাই নেই। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব গরিব মানুষকে চাল দিতে হলে কম করে ১২ হাজার টন চালের প্রয়োজন এই মুহূর্তে। সে জন্য লাগবে কমপক্ষে ৭ কোটি টাকা। রাজ্য সরকারের কাছে সেই টাকার জন্য আর্জি জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু মাত্র এক কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ফলে চাল কেনা যাচ্ছে না।
লেভি হিসাবে রাজ্যের আদায় করা চালের কিছু পরিমাণ অন্য জেলার গুদাম থেকে এনে পরিস্থিতি সাময়িক সামাল দেওয়ার কথা ভাবছে জেলা খাদ্য দফতর। কিন্তু সেই চালের গুণগত মান যাচাই না করে আনা যাবে না। চালের গুণমান খারাপ হলে জেলাস্তরেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে খাদ্য দফতরকে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যস্তরের অনুমতিও লাগবে। কিন্তু সে ব্যবস্থাও বড়জোর দু’এক সপ্তাহের জন্যই সম্ভব। দীর্ঘস্থায়ী কোনও সমাধানসূত্র মিলছে না।
‘সমস্যা’ স্বীকার করেই খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অবশ্য আশ্বাস, শীঘ্রই সমস্যা মিটতে চলছে। এফসিআইয়ের কাছ থেকে চাল আনানো হচ্ছে। ছত্তীসগঢ় থেকে কিছু চাল এসেওছিল। তার মান খারাপ হওয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। অন্ধ্র থেকে কয়েক দিনের মধ্যেই চাল এসে যাবে।”
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বিপিএল, অন্ত্যোদয়-সহ বিভিন্ন সহায়তা-প্রকল্পের আওতাভুক্তদের মাসের এক সপ্তাহে চাল, পরের সপ্তাহে আটা দেওয়া হয়। অর্থাৎ মাসে দু’বার চাল ও দু’বার আটা দেওয়া হয়। জঙ্গলমহলের জন্য আবার চালেরও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। অন্যত্র যেখানে মাথা পিছু ৩৫ কেজি খাদ্যশস্য (২০ কেজি চাল ও ১৫ কেজি আটা) দেওয়ার কথা সেখানে জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের জন্য ৫৫ কেজি খাদ্যশস্য (৪০ কেজি চাল ও ১৫ কেজি আটা) বরাদ্দ করা হয়েছে। সবাই যখন সেই বাড়তি খাদ্যশস্যের আশায়, ঠিক তখনই আদৌ চাল দেওয়া যাবে কি না, সে নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে খাদ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, “আগের কোনও সপ্তাহে চাল কেউ না পেয়ে থাকলে পরের বার সেই বকেয়াও দিয়ে দেওয়া হবে।”
এখন এই আশ্বাসই ভরসা গরিব মানুষের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.