খালে বর্জ্য ফেলায় রুদ্ধ প্রবাহ, দূষণে অতিষ্ঠ মানুষ
মাছের আড়ত থেকে বর্জ্য পদার্থ পাশের খালের জলে মিশে এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। দূষণের জেরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকার বাসিন্দারা থেকে ব্যবসায়ীরা। দূষণ রোধে এখনও ব্যবস্থা না নিলে শীতের মরসুমে ডায়মন্ড হারবার এবং পুরনো কেল্লার আকর্ষণে পর্যটকদের ভিড় কমবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় হোটেল মালিকেরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে নগেন্দ্রবাজার। এই বাজরেই রয়েছে মাছের আড়ত। আছে ৭০টি দোকান। দোকানগুলি ছাড়াও রয়েছে মাছ প্যাকিং করার জন্য ৫০টি ঘর। দোকানগুলি এবং প্যাকিংয়ের ঘরগুলি থেকে নিয়মিত মাছের আঁশও অন্যান্য বর্জ্য জাতীয় সড়ক লাগোয়া দশানি খালে পড়ে। খালের পাড় ঘেঁষে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে অসংখ্য হোটেল, খাবার হোটেল। উল্টোদিকেই রয়েছে জায়মন্ড হারবারে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ পুরনো কেল্লার ধ্বংসাবশেষ।
ছবি: দিলীপ নস্কর।
দীর্ঘদিন ধরে মাছের আড়তের বর্জ্য খালের জলে পড়তে থাকায় বর্তমানে যা অবস্থা তাতে খালের জল আর নজরে পড়ে না। জলের উপরে জমে গিয়েছে আবজর্নার মোটা স্তর। খালটি রবীন্দ্রনগর থেকে ধনবেড়িয়া, কানপুর, বোলসিদ্ধি হয়ে বাসুলডাঙা খালে পড়েছে। নগেন্দ্রবাজার থেকে দু’তিন কিলোমিটার জুড়ে খালের জল দূষণের পাশপাশি ওই নোংরা জল গ্রামে ঢুকেও দূষণ ছড়াচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্গন্ধে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। খালের জলে গায়ে চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। মশা-মাছির উপদ্রবও ভীষণভাবে বেড়ে গিয়েছে। স্থানীয় খাবার হোটেলের মালিক দেবু নন্দী, বিশ্বনাথ হালদাররা জানালেন, “খাবার জন্য হোটেলে ঢুকলে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে খেতে হচ্ছে লোকজনকে। নোংরা পরিবেশের কারণে অনেকে ঢুকতে চাইছেন না। ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসার। বাধ্য হয়ে সব সময় সুগন্ধ ছড়িয়ে রাখতে হচ্ছে। এ ভাবে চললে অনেকেই তাঁদের দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।” ওই চত্বরেই পর্যটক ও ব্যবসার সূত্রে আসা লোকজনদের থাকার জন্য বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। তা ছাড়া কাছেই রয়েছে পিকনিক স্পট পুরনো কেল্লা। কিন্তু খালের জলে দূষণের জেরে যে ভাবে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে তাতে শীতের মরসুমে হোটের পর্যটকদের ভিড় কেমন হবে তা নিয়ে আশঙ্কিত হোটেল ব্যবসায়ীরা।
খাল সংস্কার এবং দূষণ রোধের জন্য গত ১১ নভেম্বর ডায়মন্ড হারবার সিটিজেন্স ফোরামের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসক এবং পুরপ্রধানের কাছে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। সিটিজেন্স ফোরামের পক্ষে মনিরুল ইসলাম জানান, বছরখানেক আগেও এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। সেই সময় খাল সংস্কারে ব্যবস্থা নিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়ার কারণে ফের আগের অবস্থা ফিরে এসেছে।
নগেন্দ্রবাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য, “খালের জল দূষণমুক্ত করার জন্য আমরা নিয়মিত ব্লিচিং ও চুন ছড়ানোর ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়াও আড়তের বর্জ্য ফেলার জন্য ভ্যাট রাখা হয়েছে। তবে দূষণ পুরোপুরি আটকাতে গেলে পুরসভাকে এগিয়ে আসতে হবে।” মহকুমাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “খালের জল দূষণ নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। সমস্যা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ডায়মন্ড হারবারের পুরপ্রধান পান্নালাল হালদার বলেন, “মাঝে মধ্যে খাল থেকে বর্জ্য তুলে ফেলা হয়। তবে পাকাপাকি বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.