গয়া এবং মুজফ্ফরপুরের পরে এ বার পটনায় ‘হামলা’ জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক কালে পটনা এবং তার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০-১২টি করে শিশু জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
পটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাসখানেকে পটনা জেলা-সহ ছাপরা, হাজিপুর এবং মুজফ্ফরপুর থেকে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত বেশ কিছু শিশু ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, “হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুবই অসুবিধায় পড়ে গিয়েছি। অবিলম্বে এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক ব্যবস্থা করে তোলা দরকার। সেটা এখনও পর্যন্ত না থাকায় পরিকাঠামোর দিক থেকে বিভিন্ন অসুবিধা হচ্ছে। এমনকী, ওষুধও কম পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” রাজ্য স্বাস্থ্য
দফতর সূত্রে অবশ্য জানানো হচ্ছে যে, হঠাৎ করে চাপ বেড়ে যাওয়ায় কিছু সমস্যা সৃষ্টি হলেও দ্রুত যাতে তা মেটানো যায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমনকী, আক্রান্ত এলাকাগুলিতেও মশা মারার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে মুজফ্ফরপুরে প্রথম জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ বাড়ে। মস্তিষ্কের ওই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬০টি শিশুর মৃত্যু হয়। মুজফ্ফরপুরের পরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ দেখা দেয় গয়ায়। গয়ার হাসপাতালগুলিতে প্রায় ৭০টি শিশুর জাপানি এই রোগে মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, গয়া জেলায় প্রায় ৪২০টি গ্রামকে জাপানি এনসেফ্যালাইটিস আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের সচিব সঞ্জয় কুমার বলেন, “৪২০টি গ্রামকে চিহ্নিত করে ওখানে মশা মারার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এই রোগ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষকে অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়। সে ব্যাপারেও গ্রামগুলিতে লাগাতার প্রচার করে নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।”
সঞ্জয় কুমার জানান, এই রোগ ছড়ানোর অন্যতম কারণ শুয়োর। তাই শুয়োরের কাছাকাছি শিশুরা যাতে না যায়, সে দিকে কড়া নজর রাখার জন্য গ্রামের লোকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, যে হেতু গ্রামবাসীদের সচেতন করার কাজটি একা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষে করা সম্ভব নয়, সে কারণে শিক্ষা দফতরকেও এর সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। |