|
|
|
|
|
|
|
বিষয়: সাফল্যের কোনও ফর্মুলা নেই |
ছ’বছর ধরে তোমরা এই কলামটা পড়ছ। পক্ষ থেকে পক্ষান্তরে আমরা বিশ্ব খাদ্য সঙ্কট থেকে মাদার টেরিজা বহু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু ‘সাফল্যের আগে ব্যর্থতা’ বিষয়ে গত বার যে লেখাটি লিখেছিলাম, তার জন্য যে পরিমাণ সাড়া পেয়েছি, সেটা আমাকে সত্যিই স্তব্ধ করে দিয়েছে। টেলিফোনে, ই-মেল-এ, এমনকী পোস্টকার্ডে অবধি অজস্র মেসেজ পেয়েছি। এই কলাম পড়ে যদি এক জনও অনুপ্রাণিত হতেন, সেটাই আমি খুব বড় প্রাপ্তি বলে মনে করতাম, কিন্তু এত মানুষকে এ ভাবে নাড়া দিতে পারব, এটা আমার কাছে অইভাবনীয় ছিল। যেমন, এক জন মা আমাকে ফোন করেছিলেন। তাঁর ছেলে (নামটা বলব না) একটি ভাল স্কুলে পড়েছিল, কিন্তু তার পর নিজের পছন্দসই নামী কলেজে পড়ার সুযোগ পায়নি। সে এখন দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজে মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে পড়ছে। মনে মনে খুবই হতাশ। মানে সেই একই গল্প। আমি ওঁদের সঙ্গে দেখা করলাম। ছেলেটির সঙ্গে মিনিট পনেরো কথা বললাম। আমার মনে হয়, ও আমার কাছে কিছু নতুন ভাবনার রসদ পেল। সাফল্যের কোনও ফর্মুলা নেই। বস্তুত, ব্যর্থতাই বরং এগিয়ে যাওয়ার পথটা তৈরি করে দেয়, সাফল্যের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। |
|
প্রথম কিছু দিন মনে হয়েছিল, অমিতাভ বচ্চনের কপালে সাফল্য নেই। একে বাড়াবাড়ি
রকমের লম্বা, ৬ ফুট তিন ইঞ্চি, তার ওপর দেখতেও অন্য রকম, গায়ের রংও যথেষ্ট ফর্সা নয় যে
পরিচালকের কাছেই যান, কেউ সুযোগ দিতে চান না। শেষ পর্যন্ত অমিতাভ ভাবলেন, তাঁর গম্ভীর
কণ্ঠস্বরটিকে ব্যবহার করে দেখবেন, কিছু হয় কি না। অল ইন্ডিয়া রেডিয়োয় অডিশন দিলেন, পাশ
করতে পারলেন না। চাকা ঘুরল ১৯৬৯ সালে, তত দিনে অমিতাভ প্রায় হাল ছেড়েই দিয়েছেন।
খ্বাজা আহমেদ আব্বাস তাঁর ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবিতে অমিতাভকে সুযোগ দিলেন। বাকিটা ইতিহাস। |
|
|
জানো কি |
• ১৯৭১ সালে বিল ফার্নান্ডেজ তাঁর দুই বন্ধুর পরস্পর আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন। দুজনের নাম স্টিভ ওজনিয়াক (তখন ২১) এবং স্টিভ জোবস (১৬)। অতঃপর স্টিভ জোবস-এর বাবার গ্যারাজে বসে দুজনে তৈরি করলেন অ্যাপল কম্পিউটার।
• ধীরুভাই অম্বানীকে ম্যাট্রিকুলেশনের পরে অর্থাভাবে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাল ছাড়ার পাত্র ছিলেন না। ছোটবেলা থেকেই ধীরুভাই ছিলেন সুযোগসন্ধানী, ব্যবসার সামান্যতম সুযোগ পেলেই সেটা কাজে লাগাতেন, ওই বয়সেই মহাশিবরাত্রির মেলায় স্থানীয় খাবারের দোকানে গাঠিয়া বিক্রি করে নিজস্ব উপার্জন করতেন তিনি। ম্যাট্রিকের পর তিনি এডেন চলে গেলেন, প্রায় আট বছর পেট্রল পাম্পে কাজ করলেন, তার পর নিজের ব্যবসা করবেন বলে দেশে ফিরে এলেন। ঋণ করলেন, সেই টাকায় শুরু করলেন বিলায়ান্স কমার্শিয়াল কর্পোরেশন। ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি কোম্পানির সূত্রপাত হল।
• মূক এবং বধির হেলেন কেলার-এর গুণমুগ্ধ সাহিত্যিক মার্ক টোয়েন তাঁর সঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির শিল্পপতি হেনরি হাটলসন রজার্স-এর আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অ্যাবি হেলেনের পড়ার খরচ দেন। ১৯০৪ সালে চব্বিশ বছর বয়সে হেলেন কেলার র্যাডক্লিফ থেকে স্নাতক হন। তিনিই প্রথম মূক ও বধির স্নাতক।
• ১৯৮২ সাল। লেবাননের রাজধানী বেইরুট তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত। শহরে অবরোধ চলছে। ইজরায়েলি সেনা এবং প্যালেস্তাইনি জঙ্গিদের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হল। একটি হাসপাতালে আটকে পড়েছিল ৩৭টি শিশু। রণাঙ্গনের মধ্য দিয়ে রেড ক্রস-এর কর্মীদের সঙ্গে সেই হাসপাতালে পৌঁছলেন মাদার টেরিজা, উদ্ধার করে আনলেন ওই শিশুদের।
• ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। আট বছর বয়সে মাইলস্টোন দেখে তাঁর ইংরেজি সংখ্যা চিনে নেওয়ার গল্প আমাদের খুব চেনা। তীব্র জ্ঞানপিপাসা ছিল তাঁর, বাড়িতে তেল বাঁচাতে রাস্তার আলোয় পড়াশোনা করতেন, সে গল্পও আমরা জানি। সমস্ত পরীক্ষা খুব তাড়াতাড়ি পাশ করলেন, দারুণ রেজাল্ট করলেন। স্নাতক হলেন সংস্কৃত কলেজ থেকে, অনেক বৃত্তি পেলেন। সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য এবং দর্শনশাস্ত্রে অসামান্য ব্যুৎপত্তির জন্য ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি পেলেন।
• বীরেন্দ্র সহবাগের বয়স যখন সাত, তিনি একটি ক্রিকেট ব্যাট উপহার পেয়েছিলেন। খেলনা ব্যাট, বাচ্চারা যেমন পেয়ে থাকে। তাঁর বাবার মতে, সেই ব্যাটটিই সহবাগের ক্রিকেট-প্রীতির উৎস। দিল্লিতে অরোরা বিদ্যা স্কুলের খুদে পড়ুয়াটি বাবা-মাকে কেবলই বলত, ‘আমাকে একটা ক্রিকেট ব্যাট কিনে দাও, আমার লেখাপড়ায় তেমন মাথা নেই, খেলাটায় মন দিই বরং।’ ১৯৯০ সালে এক দিন ছেলে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে দাঁত ভেঙে এল, বাবা বললেন, ‘আর নয়, ক্রিকেট বন্ধ’। মায়ের সাহায্য নিয়ে বীরেন্দ্র সেই নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে গেলেন। ভাগ্যিস।
• মহাত্মা গাঁধী তাঁর অটোগ্রাফের দাম নিতেন পাঁচ টাকা করে। টাকাটা যেত হরিজন কল্যাণের কাজে। |
|
বলো তো |
১ ভারতে এইচ আই ভি সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বিল অ্যান্ড মেলিন্দা গেটস ফাউন্ডেশন কোন উদ্যোগ নিয়েছে?
২ তাঁর একটা চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, তার পরেও ১৯৬৭ সালে তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট দল নিউজিল্যান্ডে টেস্ট ম্যাচে জয়লাভ করে, বিদেশের মাটিতে সেটাই ভারতের প্রথম জয়। কে তিনি?
৩ কোন বাঙালি মহানায়কের প্রথম জীবনে একের পর এক ছবি ফ্লপ করেছিল বলে তাঁর নাম হয়েছিল ‘ফ্লপ মাস্টার জেনারাল’?
৪ এফ ডব্লিউ চ্যাম্পিয়ন-এর সহযোগিতায় কোন লেখক তথা সংরক্ষণ-বিশারদ কুমায়ুন হিলস-এ হেলি ন্যাশনাল পার্ক নামক ভারতের প্রথম ন্যাশনাল পার্ক তৈরিতে বড় ভূমিকা নেন? |
|
উত্তর |
১) আবাহন ২) মনসুর আলি খান পটৌডী
৩) উত্তমকুমার ৪) জিম করবেট |
|
|
|
|
|
|