বরাদ্দ টাকা ও জমির ক্ষতিপূরণ নিয়ে সমস্যা |
নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে গেলেও কাজ শেষ হয়নি সেতুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়দিঘি |
২০০৮ সালে শিলান্যাসের সময় বলা হয়েছিল দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রায়দিঘির পূর্বজটা ও কুলতলির ঢাকির মধ্যে সংযোগকারী সোনাটিকারি খালের উপরে সেতুর কাজ এখনও অথৈ জলে। প্রকল্পের মধ্যে কিছু চাষের জমি পড়ে যাওয়ায় সেই সব জমির মালিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং সেতুর নির্মাণ খরচ নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় আদৌ সেতু তৈরি হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। যদিও সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “সেতুর কাজ যাতে শীঘ্র শুরু হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ওই জমির মালিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের বিষয়েও আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে।” |
|
রায়দিঘির পূর্বজটা ও কুলতলির ঢাকির মধ্যে অসমাপ্ত সেতু। ছবি: দিলীপ নস্কর। |
সুন্দরবন নিগম দফতরের আর্থিক সহায়তায় ২০০৮ সালে সেতুর শিলান্যস করেন তদানীন্তন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর। কথা ছিল কাজ শেষ করা হবে দু’বছরের মধ্যে। কিন্তু দু’বছরের মাথায় অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫ মিটার লম্বা এবং ১১ মিটার চওড়া কংক্রিটের সেতুটির নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছিল ১১ কোটি টাকা। নির্ধারিত সময়ে কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরি ও সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে কিছু কারিগরি ত্রুটি থাকার কারণে বছর খানেক আগে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ দিকে নির্দিষ্ট সময়ে সেতু তৈরি না হওয়ায় খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানে সেতু তৈরির বাজেট ধরা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা।
সেতুটি তৈরি হয়ে গেলে কুলতলির নলগোড়া, চুপড়িঝাড়া, জয়নগরের ভুবনেশ্বরী এবং রায়দিঘির কনকনদিঘি, নগেন্দ্রপুরএই কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের মধ্যে যোগযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। এমনকী কুলতলির মানুষের কাছে রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে কোনও রোগীকে নিয়ে আসাও সহজ হয়ে যাবে। এ ছাড়া রায়দিঘির পূর্ব জটার প্রাচীন শিবমন্দির দেখতে প্রতি বছর জেলার নানা প্রান্ত এমনকী অন জেলা থেকেও প্রচুর ভক্তরা ভিড় করেন। তাঁরাও কম খরচে আসতে পারবেন। এলাকার মানুষের সুবিধা হবে জানা সত্ত্বেও সেতুর কাজে ‘ঢিলেমি’ দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মানুষ।
সেতু নির্মাণের দায়িত্বে থানা ঠিকাদার সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, কিছু দিন কাজ চলার পরে ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর থেকে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই টাকা সঠিক সময়ে দিতে না পারার জন্যই কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে দিন কয়েক আগে ৯০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। শীঘ্রই সেতুর কাজ ফের শুরু হবে।
মথুরাপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংসমোহন কয়াল বলেন, “দিন কয়েক আগে সেতু নিয়ে কী সমস্যা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। টাকার সমস্যা তো রয়েছেই, পাশাপাশি সেতু এবং সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে প্রায় তিন একর চাষের জমি প্রকল্পের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। সরকারি ভাবে ওই সব জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ বিঘাপ্রতি ৩৩ হাজার টাকা দেওয়ার কথা হলেও চাষিরা তা নিতে রাজি হননি। তাতেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ |
|