জিন্না ‘বাবা’র আশ্রয়ে মিলল মানোয়ারা
পুলিশের পরামর্শ ছিল, ‘নিজেই খুঁজে দেখুন না’এরপরেও কী ভরসা রাখা যায়? কাজেই মূক-বধির মেয়ের খোঁজে পুলিশ-প্রশাসনের দরজায় না ঘুরে পড়শিদের চাঁদা তোলা টাকায় একটা মাইক ভাড়া করে নিজের লজঝড়ে সাইকেলে তা বেঁধে বেরিয়ে পড়ে ছিলেন শামসুল মণ্ডল। সঙ্গে আটাশ বছরের মানোয়ারার একটা জ্যালজ্যালে ছবি আর প্লাস্টিকের ব্যাগে বাসি রুটি-আলুভাজা।
টানা দশ দিন ধরে গ্রামে গঞ্জে এ ভাবেই হারানো মেয়ের খোঁজে সাইকেল-পথে ঘুরে শেষতক কাজ যে হয়েছে শনিবার তা মালুম হল শামসুলের। ধুলিয়ানের জিন্না শেখ বড় যত্নে ‘মেয়ের মতো’ আগলে রেখেছিলেন যে। আনন্দবাজারে বাবার হন্যে হয়ে মেয়ে-খোঁজার খবর পড়ে জিন্না যোগাযোগ করেন রানিনগরের ওই গ্রামে। শনিবার মা-বাবাকে দেখে এক ছুটে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মেয়েটি।
জিন্না শেখের (ডান দিকে) আশ্রয় ছেড়ে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
গত ৩০ অক্টোবর হাসপাতালে জ্বরের ওষুধ আনতে গিয়েছিল মানোয়ারা। আর ফেরেনি। জিন্নার কাছে পৌঁছল কী করে মানোয়ারা? তা অবশ্য বোবা মেয়েটি বলতে পারেনি। সম্ভবত কোনও ভুল বাসে চেপে সে গিয়ে পড়েছিল ধুলিয়ানে। সেখানেই পথের মোড়ে মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে মায়া হয় জিন্নার। জিন্না বলেন, “মোড়ে একা একা দাঁড়িয়ে কাঁদছিল মেয়েটা। আমার কেমন যেন মায়া হল ওকে দেখে। বাড়ি নিয়ে চলে এলাম। আমার দু’টো মেয়ের তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ভেবেছিলাম, আরও একটা মেয়ে না হয় বাড়িতেই থাকবে।”
এরপরেই গত ১১ নভেম্বর কাগজে খবরটা পড়ে সঙ্গে সঙ্গে রানিনগর থানায় যোগাযোগ করেন তিনি। খোঁজ পেয়ে সামসুলও আর দেরি করেননি। কৃষি দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী জিন্না শেখ। তেরো দিন তাঁর বাড়িতেই ছিল মানোয়ারা। খবরের কাগজে বাবার ছবি দেখতে পেয়ে কান্না থামাতে পারেনি সে। বার বার হাত দিয়ে ছবিটা দেখিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করেছে, ‘এটাই আমার বাবা।’ শনিবার রাতে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরেছে মনোয়ারা। এত দিন পরে বাবাকে দেখতে পেয়ে, বাড়ি ফিরে এসে প্রথমটায় দারুন খুশি হয়েছিল সে। তবে রবিবার সকাল থেকেই আবার মুখ ভার। তেরো দিনের পরিবারকে ছেড়ে আসতে হয়েছে যে! সেখানেও যে জিন্না-বাবার মায়া পড়ে থাকল!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.