শেষ পর্যন্ত দুর্ঘটনার পরে হুঁশ ফিরল বহরমপুর পুরসভার।
বহরমপুর গ্রান্টহলের সামনের জনবহুল ও ব্যস্ততম রাস্তা কৃষ্ণনাথ রোডের উপরে রাস্তার কাজ ‘অসম্পূর্ণ’ অবস্থায় পড়ে থাকার ফলে শুক্রবার রাতে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন স্থানীয় স্বর্ণব্যবসায়ী মিহির দত্ত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ওই রাতেই বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতাল থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি এখন ‘ভেন্টিলেশন’-এ রয়েছেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
এর পরেই শনিবার সকালে তড়িঘড়ি করে অসম্পূর্ণ কাজের জায়গা ঘিরে ‘রাস্তার কাজ চলছে’! স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার তরফে অনেক আগেই এ কাজ করা উচিত ছিল। তাহলে ওই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। মিহিরবাবু সম্পর্কে পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্যের আত্মীয়। নীলরতনবাবু অবশ্য নির্বিকার গলায় বলেন, “উৎসব মরশুমে রাস্তা সারাইয়ের কাজ করা যায়নি। সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই ওই রাস্তার কাজ শেষ করা হবে।” |
কৃষ্ণনাথ রোডের উপরে মার্কেট কমপ্লেক্সের সামনের ওই রাস্তার তলা দিয়ে উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে একটি নর্দমা রয়েছে। ওই নর্দমা আটকে জল উপচে রাস্তার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল। পুরসভার পক্ষ থেকে দুর্গাপুজোর আগে তা সারানোর চেষ্টা হয়। সেই সময় গির্জার মোড় বরাবর রাস্তার বাম দিকের অর্ধেক জুড়ে কংক্রীটের ঢালাই করে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই কংক্রীটের ঢালাই এমন ভাবে ফেলা রাখা হয়েছে যে, রাস্তা নিচু হয়ে যাওয়ায় ‘মরণফাঁদ’ তৈরি হয়েছে।
কিন্তু উৎসব মরশুম শুরু হয়ে যাওয়ায় ওই কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়ে যায়। এ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কয়েক বার অভিযোগ জানান। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। ব্যবসায়ীদের কথায়, জনবহুল ওই রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে এর আগে রিকশা উল্টে পড়ে গিয়ে জখম হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া এই পথ দিয়ে পুরপ্রধান থেকে কাউন্সিলর সকলেই যাতায়াত করে থাকেন। সকলেই বিষয়টি জানেন। কিন্তু রাস্তা সারাইয়ে পুর-কর্তৃপক্ষের ‘দায়সারা’ মনোভাবকেই দায়ি করেন ব্যবসায়ী মহল।
চেম্বার অফ কমার্সের জেলা সভাপতি অজয় সিংহ বলেন, “পুরসভার গাফিলতিতেই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কংক্রিটের ঢালাই এমন ভাবে মরনফাঁদ হয়ে থাকার ফলে ভিড় রাস্তায় সামান্য অসতর্কতায় যে কোনও সময়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের তরফে পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগও জানানো হয়। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।” |