মোহনবাগান-২ (গৌরাঙ্গ-২)
টালিগঞ্জ অগ্রগামী-১ (প্রেইস) |
সুভাষ ভৌমিক হোক কিংবা সুব্রত ভট্টাচার্য-- ইদানীং মোহনবাগানের দায়িত্বে যখনই কোনও ডাকাবুকো বাঙালি কোচ এসেছেন, প্র্যাক্টিসে সবচেয়ে বেশি বকাবকি শুনতে হয় সোদপুরের গৌরাঙ্গ দত্তকে। রবিবার এই অভিজ্ঞ ফুটবলারের জোড়া গোল দিয়েই লিগ অভিযান শুরু করল মোহনবাগান।
শেষ কবে গৌরাঙ্গের জোড়া গোলে দল জিতেছে, তা মনে করতে গিয়ে রীতিমতো হারিয়ে যেতে হল স্মৃতির ভিড়ে। তবুও উত্তরের সন্ধান পাওয়া গেল না। অবশেষে গৌরাঙ্গ নিজেই ধরিয়ে দিলেন, “গত বছর ফেডারেশন কাপে টাইব্রেকারে ডেম্পোর বিরুদ্ধে গোল করেছিলাম।” আর জোড়া গোল? অনেকক্ষণ ভাবনা-চিন্তার পর মৃদুস্বরে একটা জবাব এল, “মনে করতে পারছি না।”
গৌরাঙ্গের দু’টো গোলই হেডে। এবং দু’টোর একটার কারিগর ব্যারেটো, অন্যটির স্নেহাশিস চক্রবর্তীর। ব্যারেটো এ দিন সত্তর মিনিট মাঠে থাকলেও স্বমহিমায় তাঁকে পাওয়া গেল না। সঠিক সময়ে গৌরাঙ্গের জন্য একটা ব্যাক হিল
|
গৌরাঙ্গ দত্ত: দু’গোল |
আর একটা হেড বারের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ছাড়া বলার মতো কোনও মুভ নেই। যদিও তাঁর যুক্তি, “প্রায় বারো দিন খেলার মধ্যে নেই। তাই একটু ভারী ভারী লাগছে।” গোলটা কি তা হলে তুলে রাখলেন বড় ম্যাচের জন্য? মুখে কিছু না বললেও, শরীরী ভাষা কিন্তু একটা কথাই বলছে, ‘উত্তরটা মাঠেই দেব।’
টালিগঞ্জ লড়াকু দল। ‘ছাড়ব না’ মার্কা মানসিকতা আর ‘কিছু করে দেখানো’র জেদে ভরপুর। তবে সুব্রতর সাধের বাগানে আগুন লাগানোর মতো বারুদ নেই। বড় জোর দু’একটা আঁচড় কাটতে পারে। সবুজ-মেরুন ডিফেন্ডারদের অতিরিক্ত আত্মতুষ্টির সুযোগ নিয়ে যেই দাগটা কাটলেন ওকোরোগর প্রেইস। মোহনবাগানের ছোট বক্সের মধ্যে নাইজিরিয়ানের ‘অফ দ্য বল মুভমেন্ট’ সতর্ক সাইরেনের মতো অনবরত বেজে গেল। কিন্তু ডিফেন্ডাররা সেটা শুনতেই পেলেন না। তনুময় দাসের ক্রস থেকে হেডে যখন গোল করছেন প্রেইস, তখন রাকেশ মাসি আর কিংশুক দেবনাথ অন্য জগতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়ার দারুণ অভাব।
ডার্বি ম্যাচের দামামার মধ্যেই ইস্টবেঙ্গল কোচ ট্রেভর মর্গ্যানের মতো সম্পূর্ণ পরিবর্তনের আশ্রয় নেননি সুব্রত। রক্ষণকে মোটামুটি অপরিবর্তিত রেখে মাঝমাঠে বেশ কিছু অদল-বদল করে দেখে নিলেন মোহন টিডি। কারণ এক বছর ধরে তৃষ্ণার্ত সবুজ-মেরুন জনতাকে ট্রফির মুখ দেখানোই এখন তাঁর প্রধান লক্ষ্য। সে ক্ষেত্রে আই লিগ হোক কিংবা স্থানীয় লিগ-- সবই তাঁর কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের পর সুব্রত বলছিলেন, “যে করেই হোক তিন পয়েন্ট পেতে হবে। কী ভাবে আসছে, তা নিয়ে একেবারেই ভাবছি না।” তবে সুব্রতর মাঝমাঠ ও রক্ষণ নিয়ে চিন্তা একটা থেকেই গেল। যাঁরা খেললেন, আশা জাগাতে পারলেন না।
মোহনবাগান: সুদীপ্ত, সৌরভ, কিংশুক, ধনরাজন, দলজিৎ (মুরলী), প্রদীপ (গৌতম), মাসি, গৌরাঙ্গ, স্নেহাশিস, অসীম, ব্যারেটো (জাগতার)। |