দলীয় সম্মেলন করতে সমস্যা সিপিএমের
ডিসেম্বর মাসে প্রথম দিকেই সিপিএমের উদয়নারায়ণপুর জোনাল কমিটির সম্মেলন হওয়ার কথা। কিন্তু উদয়নারায়ণপুরে তা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বড়গাছিয়ায় সিপিএমের জগৎবল্লভপুর জোনাল কমিটির কার্যালয়ে উদয়নারায়ণপুর জোনাল কমিটির সম্মেলন হতে পারে বলে দলীয় সূত্রের খবর। উদয়নারায়ণপুরের দু’টি লোকাল কমিটির সম্মেলনও ইতিমধ্যে বড়গাছিয়ায় সারা হয়েছে।
এক সময়ে সিপিএমের ‘দুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল উদয়নারায়ণপুর। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং সব শেষে বিধানসভা নির্বাচনের পর সেই পরিস্থিতি বদলেছে। রাজ্যের বহু এলাকার মতোই এখানেও এখন কোণঠাসা সিপিএম। জোনাল কমিটির সম্মেলন অন্যত্র করার সিদ্ধান্তে তারই ইঙ্গিত স্পষ্ট।
লোকাল কমিটি সম্মেলনের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একই রকম। সিপিএম সূত্রের খবর, উদয়নারায়ণপুরের বাইরে করতে হচ্ছে এই এলাকার লোকাল কমিটির সম্মেলন। গত বৃহস্পতিবার দু’টি লোকাল কমিটির সম্মেলন এক সঙ্গে করা হয়েছে বড়গাছিয়ায়। শাখা কমিটিগুলির সম্মেলন উদয়নারায়ণপুরে হলেও তা হয়েছে যথেষ্ট গোপনীয়তা বজায় রেখে।
উদয়নারায়ণপুরে সিপিএমের ছ’টি লোকাল কমিটি ছিল। রামপুর-ডিহিভুসসুট-আসন্ডা, কুর্চি-উদয়নারায়ণপুর, সিংটি-পাচারুল, কানুপাট-দেবীপুর, বিধিচন্দ্রপুর-সোনাতলা এবং উদয়নারায়ণপুর পূর্ব। রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে একমাত্র উদয়নারায়ণপুর পূর্ব ছাড়া বাকি পাঁচটি লোকাল কমিটির কার্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। পরে দলীয় ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, লোকাল কমিটির সংখ্যা কমিয়ে তিনটিতে পরিণত করা হবে। সেই মতো, বর্তমানে উদয়নারায়ণপুরে লোকাল কমিটির সংখ্যা তিনটি। পাশেই জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়ায় বৃহস্পতিবার উদয়নারায়ণপুরের দু’টি লোকাল কমিটির সম্মেলন এক সঙ্গেই অনুষ্ঠিত হল। বাকি একটি লোকাল কমিটির সম্মেলন বড়গাছিয়াতেই হবে বলে দলের এক নেতা জানান।
দু’টি লোকাল কমিটির সম্মেলনে উদয়নারায়ণপুর থেকে মিছিল করে দলীয় কর্মীরা যেতে পারেননি বলে সিপিএম সূত্রের খবর। যে যার মতো সম্মেলনে পৌঁছেছেন। তবে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি’তে সংখ্যা কমেছে শাখা কমিটির। বিধানসভা ভোটের আগে যেখানে উদয়নারায়ণপুরে শাখা কমিটির সংখ্যা ছিল ৭১টি, এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৬টিতে। লোকাল কমিটি বা শাখা কমিটিগুলির সংখ্যা কমে যাওয়ার নিয়ে সিপিএমের এক নেতা জানান, বিধানসভা নির্বাচনের পরে উদয়নারায়ণপুরে ‘সন্ত্রাসের পরিবেশ’ তৈরি হয়েছে। জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি লোকাল কমিটির কার্যালয়। এই অবস্থায় লোকাল বা শাখা কমিটিগুলি একক ভাবে রাজনৈতিক কাজকর্ম করতে চাইছে না। একাধিক শাখা কমিটি বা লোকাল কমিটিকে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা এক সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারে।
প্রতিবার সিপিএমের শাখা কমিটিগুলির সম্মেলন হত বেশ সাড়া জাগিয়ে। পতাকা তোলা হত। পাড়ায় মাইক বাজিয়ে হত প্রকাশ্য সম্মেলন। কিন্তু এ বারে সব বন্ধ। শাখা কমিটিগুলির বৈঠক হয়েছে গোপনে, রাতের দিকে। তা-ও আবার কোনও দলীয় কর্মীর বাড়িতে। পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। অগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই তিন মাসে ৪৬টি শাখা কমিটি এ ভাবেই নমো নমো করে সম্মেলন সেরেছে।
এই পরিস্থিতির জন্য তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’কেই দায়ী করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের হাওড়া জেলা কমিটির সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, “ছ’মাস সরকার চালিয়ে তৃণমূল ব্যর্থ। সম্মেলনের মাধ্যমে যাতে আমরা সেই ব্যর্থতার কথাগুলি মানুষকে জানাতে না-পারি সে জন্য তৃণমূল সন্ত্রাসের পরিস্থিতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে কিছু সম্মেলন এলাকার বাইরে গিয়ে করতে হচ্ছে। এটা অনেক জায়গারই সমস্যা”। তৃণমূল নেতৃত্ব পাল্টা দাবি করেছেন, ৩৪ বছর ধরে সন্ত্রাস করে সিপিএম জনসমর্থন হারিয়েছে। দলীয় কার্যালয়গুলি খোলার পর্যাপ্ত কর্মী তাদের দলে নেই। লোকাল বা জোনাল কমিটির সম্মেলন করলে কর্মী জোগাড় করতে পারা যাবে না। সেই ‘হাস্যকর’ অবস্থার হাত থেকে বাঁচতে তারা এই এলাকার বাইরে সম্মেলন করছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.