‘দিদির অনাগ্রহ’
অসমে তৃণমূল ত্রিধাবিভক্ত, বিভ্রান্ত নেতা থেকে কর্মীরা
শ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের যখন রমরমা অবস্থা, অসমে তখন তাদের চেহারা দীর্ণ। ভাঙন প্রশস্ত হচ্ছে, ঠেকানোর লোক নেই। জেলা স্তরের নেতা-সহ সাধারণ কর্মীরা বিভ্রান্ত। সংগঠনের কথা কার কাছে জানতে চাইবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না কর্মীরা। দেবেশ্বর বরা ১৮ মে রাজ্য সভাপতি পদে ইস্তফা দিয়েছেন। এখন তিনি কংগ্রেসে ফেরার কথা প্রকাশ্যেই বলছেন। এর পরও ছ’মাসে এক জন নতুন সভাপতি মনোনীত করতে পারেনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকী অস্থায়ী ভাবেও কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। গত সপ্তাহে তৃণমূলের সর্বভারতীয় অধিবেশনে একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের কথা উঠেছিল, তাও সেখানেই আটকে রয়েছে।
এপ্রিলে যে শক্তি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস অসমের ১২৬টি বিধানসভা আসনের ১১৯টিতে প্রার্থী দিয়েছিল এখন তা ত্রিধা-বিভক্ত। দেবেশ্বর বরা, অমরেশ রায়রা কংগ্রেসে ফিরতে উদগ্রীব। অলক ঘোষ, শ্যামল বরুয়াদের নেতৃত্বে আর একটি গোষ্ঠী নতুন এক আঞ্চলিক দল গঠনের জন্য তৎপর। দুই গোষ্ঠীরই অভিযোগ, দিদি বা তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অসম নিয়ে কোনও চিন্তাভাবনাই নেই। বিধানসভা নির্বাচনের সময় তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ভোটের পর সংগঠন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাঁদের অনাগ্রহ স্পষ্টই ধরা পড়ে। তৃতীয় গোষ্ঠীটি অবশ্য এখনও বিশ্বাস করে, দিদি-সহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অসমের দিকে নজর দেবেন। ওই গোষ্ঠীটির নেতৃত্বে রয়েছেন অসমের একমাত্র তৃণমূল বিধায়ক দীপেন পাঠক।
দিদিতে এমন অচলমতি? দীপেনবাবুর বক্তব্য, সে দিন সর্বভারতীয় অধিবেশনে তাঁকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। দ্রুত স্টিয়ারিং কমিটি গড়ার আর্জি জানালে মুকুল রায়-সহ কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁকেই আপাতত রাজ্য-প্রধানের কাজ চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এ সংক্রান্ত কোনও নিযুক্তিপত্র তিনি হাতে পাননি বলে দীপেনবাবু স্বীকার করেছেন। তবু তাঁর আশা, মাস দুয়েকের মধ্যেই সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। দিদির প্রকৃত অনুরাগীদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। পরে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে পৌঁছে দেওয়া হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে প্রার্থী দেওয়ার চিন্তাভাবনাও তাঁদের রয়েছে। আর ওই দিনের অপেক্ষাতেই রয়েছেন বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াকি, জাহানারা বেগম ভট্টাচার্য, দক্ষিণ করিমগঞ্জ বিধানসভা আসনের প্রার্থী ইকবাল হোসেন, পাথারকান্দির রূপম নন্দী পুরকায়স্থরা।
কিন্তু দেবেশ্বরের আমলের করিমগঞ্জ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অমরেশ রায় বলেন, “দিদির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিই। গাঁটের টাকা খরচ করে ভোটে লড়ি। এর পরও যদি আমাদের ধরে রাখার
কোনও আগ্রহ তাঁর না থাকে তবে আর দলে থাকব কেন?” তাঁর ধারণা, দিদি পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার পরিচালনা করছেন। কেন্দ্রেও একে অপরের শরিক। তাই সংগঠন বিস্তারের মাধ্যমে অসমের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারকে বিব্রত করতে চান না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্য দিকে, আবদুল ওয়াকি বলেন, “আমরা অপেক্ষায় ছিলাম কখন দিদি এ দিকে নজর দেন। অমরেশবাবুরা সময়ের আগেই অস্থির হয়ে পড়েছেন। এ বার দিদি নিজেই ঘোষণা করেছেন, মণিপুর বিধানসভার আগামী নির্বাচন-সহ উত্তর-পূর্বের দিকে এখন তিনি বিশেষ দৃষ্টি দেবেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.