রাজ্যের পর্যটন-মানচিত্রে দিঘা-দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি, ঝাড়গ্রামকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে দ্বিতীয় দফায় জঙ্গলমহল সফরে এসে গত ১৫ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের জনসভায় জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই উদ্দেশেই শনিবার ঝাড়গ্রাম ও বেলপাহাড়ির বেশ কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করেন রাজ্যের পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব রাঘবেন্দ্র সিংহ ও রাজ্যের পর্যটন-অধিকর্তা পৃথা মজুমদার। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, ঝাড়গ্রামের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট স্বদেশরঞ্জন প্রামাণিক। শনিবার তাঁরা প্রথমে জামবনির চিল্কিগড়ের কনকদুর্গা মন্দির ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এরপর বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোর, কেতকিঝর্না ও ঘাঘরা এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। পরে ঝাড়গ্রাম শহরের বনানী অতিথিশালা (ঝাড়গ্রাম পুরসভার ওই অতিথিশালাটি এখন সিআরপি ক্যাম্প), রবীন্দ্রপার্ক ও শহরের উপকন্ঠে বাঁদরভোলায় পর্যটন দফতরের টাকায় বন দফতরের উদ্যোগে নির্মীয়মাঁ প্রকৃতি-ভ্রমণ কটেজটি পরিদর্শন করেন প্রধান সচিব ও অধিকর্তা।
মাওবাদী আতঙ্কে ও খুন-অশান্তির জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে ঝাড়গ্রামের পর্যটন ব্যবসার খুবই সঙ্গিন অবস্থা। অথচ ঝাড়গ্রামের নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ও স্বাস্থ্যকর জলবায়ুর টানে বছর দশেক আগেও পর্যটকদের ঢল নামতো এখানে। ‘চারমূর্তি’, ‘বেহুলা লখিন্দর’-এর মতো অনেক হিট বাংলা ছবির শু্যটিং হয়েছে বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোর, ঘাঘরার মতো জায়গাগুলিতে। ২০০৪ সালে কাঁকড়াঝোরে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে বন দফতরের দু’টি বন-বাংলো ধ্বংস করে দেয় মাওবাদীরা। সব মিলিয়ে আতঙ্কের ঝাড়গ্রামকে এড়িয়ে চলছিলেন ভ্রমণ পিপাসুরা। পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে ঝাড়গ্রামের দশটি দ্রষ্টব্য জায়গার পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। বেলপাহাড়ির পাহাড়ি পথে তৈরি হবে বিশেষ ট্রেকিং-রুট। কয়েকটি জায়গায় স্থানীয় আদিবাসী-মূলবাসীদেরও পর্যটন-পেশার সঙ্গে যুক্ত করতে চায় পর্যটন দফতর। |