নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনায় তৈরি হয়েছে চকচকে রাস্তা। কিন্তু ওই রাস্তা ধরে একটিও বাস চলাচল করে না। ফলে দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত পারুলিয়া পঞ্চায়েতটি কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ওই পঞ্চায়েত এলাকার বসবাসকারী প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কাছে যোগাযোগের মাধ্যম বলতে গরুরগাড়ি, সাইকেল বা মোটরবাইক। আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছল পরিবারের জন্য কখনও কখনও ভাড়া করা গাড়ি ঢোকে। তবে হাতে গোনা।
এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, যোগাযোগ ব্যবস্থা বলে তো কিছুই নেই। তবে এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া চন্দ্রভাগা নদীর উপরে দু’টি জায়গায় যদি সেতু তৈরি হয়, তা হলে সদর শহর সিউড়ির সঙ্গে কমপক্ষে ৮-১০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। তাদের মধ্যে একটি সেতুর চাহিদা রয়েছে জামথলিয়া গ্রাম থেকে রাওতাড়া যাওয়ার পথে, অন্যটি হাজরাপুর থেকে শীতলপুর যাওয়ার পথে। কিন্তু না পারুলিয়া পঞ্চায়েত, না দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতি বা প্রশাসনকেউ বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেনি। মৌখিক ভাবে তাঁরা একাধিকবার সমস্যার কথা জানিয়েছেন। |
সেতু দু’টি হলে এলাকার মানুষ খুবই উপকৃত হবেন সেটা মেনে নিয়েছেন পারুলিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান, সিপিএমের রবিলাল অঙ্কুরের দাবি, “সেতু হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন সেটা ঠিকই। তবে কেউ আমার কাছে কোনও আবেদন জানাননি। তা ছাড়া, সেতু তৈরি করে দেওয়ার ক্ষমতা পঞ্চায়েতের নেই।” তিনি বলেন, “তবে শুনেছি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেতুগুলি তৈরি হবে।” প্রায় একই দাবি দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সিপিএমের প্রিয়ঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তিনি বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ। কিন্তু সেতু তৈরির দাবি কেউ আমার কাছে জানাননি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় বাসিন্দারা। দাবি পেলে কী ভাবে বিষয়টির সমাধান করা যায় দেখা হবে।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, “শীতলপুরের দিকের সেতুটি না হলেও জামথলিয়া থেকে রাওতাড়া যাওয়া রাস্তায় থাকা চন্দ্রভাগা নদীর উপরে সেতুর দাবি একাধিক বার জানানো হয়েছে।” জামথলিয়া গ্রামের সফিকুল ইসলাম, শঙ্করপুরের রফিকুল হক বা রাওতাড়া গ্রামের আনন্দ মণ্ডলরা বলেন, “দুবরাজপুর যেতে হলে চিনপাই পর্যন্ত ৮-১০ কিলোমিটার রাস্তা কোনও ভাবে গেলে ওখান থেকে দুবরাজপুর যাওয়ার বাস মেলে। সিউড়ি যেতে হলেও বিভিন্ন দিক থেকে কমপক্ষে ১০-১৮ কিলোমিটার পথ কষ্ট করে যেতে হয়। সেতুটি হলে সিউড়ি থেকে আমাদের গ্রামের দূরত্ব ৭-৮ কিলোমিটার কমে যাবে। কিন্তু বাস যোগাযোগের ক্ষেত্রে কবে আশার আলো দেখা যাবে কে জানে!” তাঁদের ক্ষোভ, “শীত-গ্রীষ্মে সমস্যাটা ততখানি প্রকট না হলেও বর্ষাকালে নদীতে জল থাকলে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয়। তা সে সিউড়ি সদর হাসপাতালে রোগী ভর্তি করাই হোক বা নদীর দু’দিকে থাকা জমিতে যেতে গেলে। কারণ ঘুরপথে সময়, শ্রম ও অর্থ সবই বেশি প্রয়োজন।” |