বিমান বসুর মন্তব্য ঘিরে ফের দানা পাকাল বিতর্ক। আজ মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, “ওঁর হাঁটার অসুবিধা আছে। তাই উনি গাড়ি করে যাচ্ছেন। বৈঠক করে ফিরে আসছেন।” তাঁর এই মন্তব্যকে ‘অক্ষমের ঈর্ষা’ হিসেবেই দেখছে তৃণমূল শিবির। ঈষৎ বিরক্ত সিপিএম নেতারাও মনে করছেন, বিমানবাবুর এই ধরনের মন্তব্য ‘অপ্রাসঙ্গিক’।
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি আসার ঠিক আগেই কলকাতায় কংগ্রেস-তৃণমূল সম্পর্ক নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্য করেছিলেন বিমানবাবু। তা নিয়ে বিবৃতি দিয়ে দুঃখপ্রকাশও করেন তিনি। তার পরেও যে তিনি ‘শোধরাননি’, সেটা আজকের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট। কোথায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর হাঁটার অসুবিধা দেখলেন, (বস্তুত, মমতা হাঁটতে ভালইবাসেন। বিধানসভা ভোটের আগে একের পর এক দীর্ঘ পদযাত্রাও করেছেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের রোড শো-র সঙ্গে যার তুলনা টেনে তখন আলোচনাও হয়েছিল বিস্তর) কলকাতা থেকে জেলা সফরে যাওয়ার সঙ্গে হাঁটার সম্পর্ক কোথায়, তার কোনও ব্যাখ্যা বিমানবাবু দেননি।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “বিমানবাবুর বক্তব্যের কোনও অর্থই বুঝতে পারছি না। মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জেলায় মহাকরণকে পৌঁছে দিচ্ছেন। কাজে গতি এনেছেন। এখন বিমানবাবুদের ঈর্ষান্বিত হওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।”
অন্য দিকে, একান্ত আলোচনায় সিপিএম নেতারা বিমানবাবুর মন্তব্য নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলেও স্বাভাবিক ভাবেই প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, “বিমানদা কোন পরিপ্রেক্ষিতে কথাটা বলেছেন সেটা আমি দেখিনি। ফলে এ নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়। তবে সংবাদমাধ্যম এখন মূল বিষয় ছেড়ে ব্যক্তির উপরে বেশি নজর দিচ্ছে। তাই মন্তব্য নিয়ে অকারণ মাতামাতি করা হচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর ‘হাঁটা’ নিয়ে মন্তব্যের পাশাপাশি তাঁর জেলা সফর নিয়ে বিমানবাবু আরও বলেন, “উনি বৈঠক করছেন, পর্যালোচনা করছেন, এতে যদি ভাল হয়, তা হলে রাজ্যের পক্ষে ভাল। কিন্তু ভাল না খারাপ, তা ছয় মাস না গেলে বলা ঠিক হবে না।”
মাওবাদী প্রসঙ্গেও আজ ফের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন বিমান। তাঁর অভিযোগ, মাওবাদীদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার সময় মুখ্যমন্ত্রী বোঝেননি যে, ওদের একটা রাজনৈতিক দর্শন রয়েছে। বিমানবাবুর কথা।, “মাওবাদীরা ওঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চেয়েছিল। এখন ওরাই আর কথা শুনছে না। মাওবাদীরা তাদের নিজস্ব অতি-বাম রাজনৈতিক দর্শন অনুযায়ী অবস্থান নিচ্ছে। কাজেই চূড়ান্ত ফলাফল কী দাঁড়ায়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।” |