|
|
|
|
চলন্ত গাড়িতে খুন |
চিঠির সূত্রে জানা গেল নিহত মহিলার পরিচয় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
ব্যাগ থেকে মেলা চিঠির সূত্র ধরে জানা গেল, চলন্ত গাড়িতে খুন হওয়া মহিলার পরিচয়। সেই সঙ্গে আততায়ীদের পরিচয় এবং খুনের উদ্দেশ্যও জানা গিয়েছে বলে দাবি করল পুলিশ।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অশোক প্রসাদ শনিবার বলেন, “নিহত মহিলার নাম বিজলি মালিক (৩৭)। প্রাথমিক তদন্তে আমাদের অনুমান, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে।”
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভাঙড় থেকে দিঘার পথে গাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে নন্দকুমারের কাছে শ্বাসরোধ করে ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন গাড়ির চালক সঞ্জয় মণ্ডল। অ্যাসিড ঢেলে মহিলার মুখও বিকৃত করে দেওয়া হয়। গাড়ি থেকে পাওয়া যায় একটি ব্যাগ। তার মধ্যে মেলা চিঠিতে মধুমিতা মণ্ডল নামে এক মহিলার উল্লেখ ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, চিঠিতে ঠিকানা ছিল কলকাতার ধাপা এলাকার। ওই চিঠির সূত্র ধরে এ দিন সকালে কোলাঘাট থানার পুলিশ ধাপার প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় পৌঁছয়। জানা যায়, নিহত হয়েছেন মধুমিতা মণ্ডলের মা-বিজলি মালিক।
পুলিশ জানিয়েছে, বিজলিদেবীর বিয়ে হয়েছিল হাওড়ার সাঁকরাইলে। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে ‘দূরত্ব’ তৈরি হওয়ায় বছর তিনেক ধরে ধাপায় বাপের বাড়িতেই থাকতেন। তাঁর বাবা প্রভাত মণ্ডল কলকাতা পুরসভার সাফাই-কর্মী। প্রভাতবাবুরা পুলিশকে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বিজলি। আর ফেরেননি। পুলিশের সঙ্গে প্রভাতবাবু এবং বিজলিদেবীর খুড়তুতো ভাই উদয় মণ্ডল এ দিন তমলুকে আসেন। তমলুক হাসপাতালের মর্গে তাঁরা বিজলির দেহ শনাক্ত করেন।
গাড়ির চালক পুলিশকে জানিয়েছিলেন, মনিরুল মোল্লা বলে পরিচয় দিয়ে ভাঙড় থেকে গাড়িটি ভাড়া করেছিলেন এক যুবক। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর সঙ্গে আরও এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক ওঠেন গাড়িতে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘটকপুকুর থেকে গাড়িতে ওঠেন ওই মহিলা। রাতে গাড়িতেই তোয়ালের ফাঁস দিয়ে ওই মহিলাকে খুন করে তাঁর মুখ ও শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়। এ দিন উদয়বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া গ্রামের মনিরুল তাঁর পরিচিত। পুলিশের কাছে সঞ্জয়ের দেওয়া বর্ণনা শুনে উদয় পুলিশকে জানান, তাঁর অনুমান, গাড়িতে মনিরুলের সঙ্গী ছিলেন কাঁঠালিয়ারই বাসিন্দা জিয়ারুল মোল্লা। মনিরুল এবং জিয়ারুলের সঙ্গে তিনি এক সময় কাঠের ব্যবসা করতেন।
পুলিশ সুপারের দাবি, “তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, ব্যবসা-সূত্রেই মনিরুল এবং জিয়ারুল ধাপার ওই এলাকায় যাতায়াত করত। বিজলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল মনিরুলের। কিন্তু ইদানীং অন্য কারও সঙ্গে বিজলি জড়িয়ে পড়েছেন সন্দেহে এই খুন করা হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও খুনের ঘটনায় মনিরুলের সঙ্গী হয়েছিল তাঁর বন্ধু জিয়ারুল।” ধাপা থেকে পুলিশের একটি দল এ দিন ভাঙড়েও হানা দিয়েছিল। তবে কাঁঠালিয়ার বাড়িতে মনিরুল, জিয়ারুলদের খোঁজ মেলেনি। তাদের খোঁজে এক যোগে তল্লাশি শুরু করেছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। গাড়ি-চালক সঞ্জয়কেও আটক করা হয়েছে। বিজলিদেবীর বাবা প্রভাতবাবু বলেন, “মেয়ের সঙ্গে মনিরুলের ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানতাম না।” উদয়বাবুরও দাবি, “আমার ব্যবসার সঙ্গী হিসেবেই বাড়িতে আসত মনিরুল। বিজলিদির সঙ্গে কথাবার্তাও বলত। কিন্তু ওদের মধ্যে কিছু ছিল বলে আঁচ করতে পারিনি।” |
|
|
|
|
|