মাওবাদীরা বলছে ‘এলাকা দখল’
মাওবাদী-ঘাঁটিতে ফের হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
‘মাওবাদী ঘাঁটি’ বলে পরিচিত এলাকায় মিছিল নিয়ে গিয়ে মাওবাদী নেতাদের ফের ‘হুঁশিয়ারি’ দিলেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। এ দিনই সংবাদমাধ্যমের কাছে বিবৃতি পাঠিয়ে মাওবাদীরা সমালোচনা করল শুভেন্দু-সহ তৃণমূল নেতৃত্বের।
শনিবার দুপুরে ঝাড়গ্রামের আগুইবনি অঞ্চলের একতাল ফুটবল মাঠ থেকে পদযাত্রা শুরু করে তিন কিলোমিটার দূরের কুড়াশোল পর্যন্ত যান শুভেন্দুবাবুরা। পুলিশের হিসেব অনুযায়ী, পদযাত্রায় ৬-৭ হাজার লোক হয়েছিল। কুড়াশোল গ্রামের সভাস্থল থেকে বড়জোর দু’কিলোমিটার দূরে ‘মাওবাদীদের ঘাঁটি’ বিরিহাঁড়ি গ্রাম। নিরাপত্তার কারণে জঙ্গলাকীর্ণ বিরিহাঁড়ি পর্যন্ত পদযাত্রা নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। সভায় শুভেন্দু দাবি করেন, “আমরা আগুইবনি থেকে বিরিহাঁড়ির প্রান্ত পর্যন্ত এসেছি।” মাওবাদী নেতাদের নাম করে তিনি বলেন, “মাওবাদীরা তোমাদের সময় হয়ে গিয়েছে। জয়ন্ত, আকাশ, বিকাশেরা বন্দুকগুলো জমা দিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ কর। অথবা ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড কিংবা ওড়িশায় পালাও। এই এলাকায় তোমাদের কোনও স্থান নেই।” তাঁর সংযোজন, “সুশান্ত ঘোষ, প্রশান্ত দাসেরা জেলে। অস্ত্র নিয়ে যারা ঘুরবে, তারাও যাবে জেলে।
ঝাড়গ্রামে কুড়াশোলে শুভেন্দুর পদযাত্রা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
মানুষই শেষ কথা বলবে।” যুব তৃণমূলের এই নেতার বক্তব্য, “জঙ্গলমহলে আমাদের নেতা, কর্মী, সাধারণ মানুষ খুন হবেন কেন? কেন ওই এলাকায় স্কুলছাত্র অপহৃত হবে? খুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াইটা গণতান্ত্রিক।”
শুভেন্দুর এই কর্মসূচি নিয়ে এ দিন রীতিমতো চিন্তায় ছিল পুলিশ-প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবার বিরিহাঁড়ি লাগোয়া নেদাবহড়ার (যদিও ওই রাস্তাটি কোন ভাবেই পদযাত্রার রুটের অন্তর্ভুক্ত ছিল না) রাস্তায় তিনটি মাইন উদ্ধার হয়। শুক্রবার ফের ওই রাস্তাতেই মেলে একটি ‘ডিরেকশনাল মাইন’। শুভেন্দুর পদযাত্রায় না যাওয়ার হুমকি দিয়ে এলাকায় পোস্টার দেয় মাওবাদীরা। এ দিন বিকেলে সিপিআই (মাওবাদী)-র ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটির মুখপাত্র বাহা টুডুর নামে ছাপানো বিবৃতিতে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, সভার ব্যাপারে ‘বোমার গল্প এবং হুমকির গল্প’ শোনাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মাওবাদীদের অন্যতম প্রধান অভিযোগ, শুভেন্দু এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়, শিশির অধিকারীর মতো তৃণমূল নেতারা ‘জঙ্গলমহল দখল’ করতে চাইছেন। বিবৃতির ভাষায়, ‘এই দখলদারি যুদ্ধের সুন্দর নাম হল- পদযাত্রা, শান্তিসভা,...’। আর মাওবাদীদের সমালোচনা করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, “আমাকে ওরা মিথ্যেবাদী বলছেন। বলছেন, আমরা নাকি গ্রাম দখল করতে যাচ্ছি! দেখুন তো, দলীয় পতাকা ছাড়া আমাদের সঙ্গে আর কী আছে! আমাদের ভুল থাকলে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আপনারা আমাদের সমালোচনা করুন।”
বিরিহাঁড়ি ও লাগোয়া এলাকায় সাম্প্রতিক মাইন উদ্ধারের ঘটনা উল্লেখ করে সাংসদ বলেন, “এত মাইন উদ্ধারের পরে আমরা কিছুটা আশঙ্কায় ছিলাম, পদযাত্রা ও সভায় লোকজন আসবেন তো!” পরক্ষণেই তাঁর দাবি, “আমরা কিন্তু বেলপাহাড়ি, বিনপুর, লালগড়, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, চন্দ্রকোনা থেকে লোক আনিনি। ধান কাটার মরসুম সত্ত্বেও কেবল ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা, চন্দ্রি, আগুইবনি, বালিভাসা, মানিকপাড়া, লোধাশুলি অঞ্চলের হাজার-হাজার মানুষ শান্তি-পদযাত্রায় সামিল হয়েছেন।”
শুভেন্দুর মন্তব্য, “সিপিএমের হার্মাদ নেতা অনুজ পাণ্ডে, প্রশান্ত দাস, অনিল মাহাতোরা যে ভাবে চলত, আকাশ, বিকাশ, জয়ন্ত, হেমন্তরা সে ভাবেই চলতে চায়। এখন সিপিএমের সঙ্গে মাওবাদীদের সখ্য হয়েছে। এ সব বরদাস্ত করব না।” ১৭ নভেম্বর সাঁকরাইলের কেশিয়াপাতায় সভা করবেন বলে ঘোষণা করেন শুভেন্দু। ডিসেম্বর থেকে জঙ্গলমহলেও লাগাতার কর্মসূচি হবে বলে জানান। পদযাত্রা-কর্মসূচিতে ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতো, নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু, শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.