হাওড়া স্টেশনে রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ)-র এক জওয়ানের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার ডিআরএম বিল্ডিং লাগোয়া আরপিএফের স্ট্রংরুমের সামনে। হাওড়া সিটি পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কেশবপ্রসাদ তিওয়ারি (৫৯)। তিনি আরপিএফের হেড কনস্টেবল ছিলেন। বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই জওয়ানকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরপিএফ সূত্রে খবর, কেশবপ্রসাদ দীর্ঘদিন হাওড়ার গোলমোহর এলাকার ব্যারাকে থাকতেন। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় কিছু দিন ছুটি নিয়ে দেশের বাড়িতে গিয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে ফেরেন। এ দিন স্ট্রংরুমের বাইরে পাহারার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। স্ট্রংরুমের ভিতরে ছিলেন এল ছেত্রী নামে অন্য এক জওয়ান। তাঁর কথায়, “স্ট্রংরুমের বাইরে আচমকা গুলির শব্দ শুনে বেরিয়ে দেখি, কেশবপ্রসাদ একটি বেঞ্চের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে ছটফট করছেন। পাশেই পড়ে রয়েছে তাঁর রাইফেলটি। রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা ঘর।” গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে চলে আসেন কয়েক জন আরপিএফ জওয়ান ও রেলকর্মী। তাঁরাই কেশবপ্রসাদকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, কিছু দিন ধরেই কেশবপ্রসাদ অবসাদে ভুগছিলেন। সেই থেকেই সম্ভবত আত্মহত্যা করেন তিনি। তাঁর পকেট থেকে সুইসাইড নোট ও একটি প্রেসক্রিপশন মিলেছে। সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করা হয়নি। তবে সেখানে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের ফোন নম্বর লেখা ছিল। ওই নম্বরে ফোন করেই মৃত্যুর খবর পৌঁছে দেওয়া হয় কেশবপ্রসাদের বালিয়ার বাড়িতে।
হাওড়ার ডিসি সদর সুকেশকুমার জৈন বলেন, “রেল পুলিশের থেকে রির্পোট পাওয়ার পর তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাটি আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট জানা যাবে।” আরপিএফের তদন্তকারী অফিসার মির ঔরঙ্গজেব এ দিন বলেন, “কেশবপ্রসাদের স্নায়ুর রোগ ছিল। তিনি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোয় আমাদের কাছে তাঁর রোগ সংক্রান্ত সর্বশেষ কোনও খবর ছিল না। মৃতের পকেট থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন থেকেই আমরা তাঁর অসুস্থতার খবর জানতে পারি।” |