অদূর ভবিষ্যতে ইস্পাতের দাম বাড়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। এক দিকে, আকরিক লোহা কিংবা কোকিং কোলের মতো কাঁচামালের মূল্য হ্রাস। অন্য দিকে, বিশ্ব অর্থনীতির বেহাল দশার জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে ইস্পাতের চাহিদা যথেষ্ট পড়ে যাওয়া। মূলত এই দুই কারণে অন্তত আগামী বেশ কিছু দিন ইস্পাতের দাম বাড়বে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে শনিবার সিআইআই আয়োজিত ‘বিজ ব্রিজ-২০১১’ শীর্ষক আলোচনা সভায় টাটা স্টিলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং বণিকসভাটির খনি ও ধাতু সংক্রান্ত সাব কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এম নেরুরকর বলেন, “অন্তত আগামী ত্রৈমাসিকে ইস্পাতের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলেই আমার ধারণা।” তাঁর যুক্তি, “গত তিন সপ্তাহ ধরেই দাম কমছে ইস্পাত তৈরির কাঁচামাল আকরিক লোহা এবং কোকিং কোলের। ফলে খরচ বাড়ছে না ইস্পাত তৈরির। সেই কারণেই আপাতত তার দাম স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা।”
তবে ইউরোপের আর্থিক সঙ্কট এবং বেহাল মার্কিন অর্থনীতির জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে ইস্পাতের চাহিদাও
|
এইচ এম নেরুরকর |
তেমন বাড়ছে না বলে মেনে নিয়েছেন নেরুরকর। কিন্তু টাটা স্টিল কর্তার দাবি, দেশের বাজারে ইস্পাতের যে চাহিদা রয়েছে, তা ভারতে এই শিল্পকে চাঙ্গা রাখার পক্ষে যথেষ্ট।
ইস্পাতের দাম নিয়ে আশার কথা শোনালেও, ভারতে খনন শিল্পের বিকাশ নিয়ে অবশ্য চিন্তার কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন নেরুরকর। শুক্রবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে (আগের বছরের একই সময়ের সাপেক্ষে) এই শিল্প সঙ্কুচিত হয়েছে ৫.৬%। টাটা স্টিল কর্তা বলেন, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে খনন শিল্পের আনুপাতিক অবদান কমেছে চোখে পড়ার মতো। এ জন্য ঢিলেঢালা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, যথেষ্ট সংখ্যায় দক্ষ কর্মী না-থাকা, পরিকাঠামোর অভাব ইত্যাদিকেই দায়ী করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে একমত হিন্দুস্তান কপারের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাকিল আহমেদ। তাঁর কথায়, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের মাত্র ২.২৫% আসে খনি ও ধাতু শিল্প থেকে। আহমেদের কথায়, পরিবেশ বিষয়ক ছাড়পত্র নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত কড়াকড়ি খনন শিল্পের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো উচিত নয়। একই সঙ্গে, এই শিল্পের উন্নতির জন্য খনি থেকে প্রাপ্ত রয়্যালটি রাজ্যগুলির ফের খনন শিল্পেই লগ্নি করা উচিত বলে সওয়াল করেন তিনি। জেএসডব্লিউ (বেঙ্গল) স্টিল-এর জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং
সিইও বিশ্বদীপ গুপ্ত আবার মনে করেন এই মুহূর্তে খনন শিল্পের উন্নতির জন্য একান্ত জরুরি উন্নততর আধুনিকতম প্রযুক্তির ব্যবহার। আগামী দিনে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের অন্তত ১০% যেন খনন শিল্প থেকে আসে, সংশ্লিষ্ট শিল্পের সামনে সেটিই লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করছেন এঁদের সকলে। |