কিংফিশার সঙ্কট
বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন মনমোহন
রাসরি অর্থ সাহায্য না করেও, কিংফিশার বিমানসংস্থার পাশে দাঁড়াতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থ জোগানোর জন্য কথা বলতে পারে ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে। গত শুক্রবার এই ইঙ্গিত মিলেছিল কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী ভায়লার রবির মন্তব্যে। আর আজ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও বুঝিয়ে দিলেন, বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলির সঙ্কটের বিষয়টি তাঁরও ভাবনায় রয়েছে। পাশাপাশি, কোনও বিমানসংস্থার আর্থিক সঙ্কটের কারণে যাত্রী-নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যাতে কোনও রকম আপস না করা হয়, সে দিকে নজর রাখার জন্য একটি কমিটি গড়েছে দেশের বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ)।
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি ফেরার পথে বিমানে কিংফিশারের প্রসঙ্গ তোলা হলে সংস্থাটির নাম উল্লেখ না করেই তিনি আজ বলেন, “বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলি ঠিক মতো পরিচালনা করাটা জরুরি। বর্তমান সঙ্কট নিয়ে বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।” এর আগে শুক্রবার বিমানমন্ত্রী ভায়লার দিল্লিতে বলেছেন, “দেশের অন্যতম প্রধান বিমানসংস্থা এই ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে, এটা আমরা কেউই চাই না। ব্যাঙ্কগুলি যাতে এই বিষয়ে এগিয়ে আসে তার জন্য আমরা কথা বলতে পারি।” খুব শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ও কিংফিশারের কর্তা বিজয় মাল্য ও তাঁর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও প্রণববাবুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আর্থিক অনটনের মধ্যে একের পর এক উড়ান বাতিল করতে হচ্ছে বিমানসংস্থাটিকে। এর মধ্যেও যে সব উড়ান চলছে, সেগুলির ক্ষেত্রে যাত্রী-নিরাপত্তায় কোনও আপস করা হচ্ছে কি না, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। শনিবার দিল্লি থেকে ফোনে ডিজিসিএ-র ডিরেক্টর ভরত ভূষণ বলেন, “আর্থিক অনটন নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু, তাতে যেন যাত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়, সেটাই দেখার। এ কারণে শুক্রবারই একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা সমস্ত বিমানসংস্থার উপরে এই বিষয়ে নজরদারি চালাবে।’’ শুধু কিংফিশার নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে বিমানের জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারতের প্রায় সমস্ত বিমানসংস্থাই এখন আর্থিক ভাবে ধুঁকছে।
তার উপরে রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের করের বোঝা। শুক্রবার রাতে টুইট করে কিংফিশারের মালিক বিজয় মাল্য বলেছেন, “রাজ্য সরকারগুলি করের বোঝা চাপিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় লোকসানে চলা রুটে উড়ান চালিয়ে যাওয়া কি আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে নাকি?” তাঁর বিমানসংস্থাকে বাঁচাতে সরকারের যত দূর সম্ভব চেষ্টা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন মাল্য। তাঁর কথায়, “প্রতিটি দেশেই বিমানসংস্থাকে বাঁচাতে সেখানকার সরকার এগিয়ে এসেছে।” কেন্দ্র সরকারের কাছে কিংফিশার সরাসরি আর্থিক সাহায্য চেয়েছে বলে প্রথমে জানা যায়। সংস্থার সিইও সঞ্জয় অগ্রবাল সে কথা অস্বীকার করে শুক্রবারে জানান, সরকারের কাছ থেকে কোনও আর্থিক সাহায্য তাঁরা চাননি। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে যে ঋণ কিংফিশার নিয়েছে, তার ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেটা হলেই আপাতত এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসবে সংস্থা।
সমস্যা শুরু হওয়ার পরে শনিবার, ষষ্ঠ দিনে দেশ জুড়ে প্রায় ৫০টি উড়ান বাতিল করেছে বিমানসংস্থা। সব মিলিয়ে গত কয়েক দিনে ২০০-র বেশি উড়ান বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে নিয়ে শনিবার সংস্থার তরফে ক্ষমাও চেয়ে নেওয়া হয়। যে যে রুটে উড়ান চালালে লাভ হয়, আপাতত সেই সব রুটেই আপাতত উড়ান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিংফিশার। সেই কারণে কলকাতা থেকে গুয়াহাটি ও আগরতলার উড়ান আপাতত বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। আইজল, বাগডোগরা রুটেও এক দিন অন্তর উড়ান চালানো হচ্ছে। তবে, যত উড়ান বাতিল করা হচ্ছে, তার সবটাই প্রধানত অভ্যন্তরীণ উড়ান। এখনই আন্তর্জাতিক রুটের উড়ান বাতিল করা হচ্ছে না বলেও সংস্থা সূত্রে খবর। কলকাতা থেকে ব্যাঙ্ককের উড়ানও নিয়মিত চলছে বলে জানা গিয়েছে।
যাঁরা এই বিমানসংস্থার উড়ানে নিয়মিত যাতায়াত করেন, সেই সব ‘ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লায়ার’ যাত্রীদের ই-মেল করে সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, শনিবার প্রায় ৫০টি উড়ান বাতিল করতে হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লাভের মুখ দেখার জন্য বেশ কিছু বিমান তুলে নিয়ে সেখানে ইকনমি ও বিজনেস শ্রেণির আসন বসানোর তোড়জোড় চলছে। এই বিমানগুলিতে এত দিন শুধুই ইকনমি শ্রেণির আসন ছিল। তবে, পূর্বঘোষিত শীতকালীন উড়ানসূচি অনুযায়ী উড়ান কেন তাঁরা চালাতে পারছেন না, তা কিংফিশারের কাছ থেকে বিশদে জানতে চেয়েছে ডিজিসিএ। এমনকী, ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেট এই দুই বিমানসংস্থার বিরুদ্ধেও শীতকালীন উড়ানসূচি না মানার অভিযোগ উঠেছে। তাদের কাছ থেকেও ব্যখ্যা চেয়েছে ডিজিসিএ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.