বিনোদন
মুক্তিযুদ্ধের গেরিলাদের ফিরে দেখল ‘গেরিলা’
সেনানীর জীবন নিয়ে ছবি সেনানীরই পরিচালনায়।
বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে সেই যুদ্ধের সেলুলয়েড দলিল তৈরি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা নাসিরুদ্দিন ইউসুফ। বাংলাদেশে ছবিটি নাগাড়ে ২৭ সপ্তাহ ধরে চলছে। এ পারের দর্শকদের কাছে সেই ছবিকে হাজির করল কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব। কলকাতায় এলেন নাসিরুদ্দিনও।
সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস ‘নিষিদ্ধ লোবান’ এবং নাসিরুদ্দিনের নিজের জীবনের গল্প মিশিয়েই এ ছবির চিত্রনাট্য। ১৯৭১ সালে নাসিরুদ্দিন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেখান থেকেই রীতিমতো প্রশিক্ষণ নিয়ে রণাঙ্গনে। রেললাইন উড়িয়ে দেওয়া, একটা ককটেল পার্টিতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো, পাক ক্যান্টনমেন্ট দখলের যে সব দৃশ্য আছে, সেগুলো এক সময় নাসিরুদ্দিনের নিজের হাতে করা ‘অপারেশন’। ছবিতে তার মানে নাসিরুদ্দিন বলে একটা চরিত্র আছে? নাসিরুদ্দিন বলেন, “ওই নামে নেই। নামটা রাখিনি। তবে আমার বন্ধুদের নাম আছে।”
এমনিতে নাসিরুদ্দিন অবশ্য কলকাতায় অপরিচিত নন মোটেই। সেই ১৯৮৫ সাল থেকে কলকাতায় তাঁর নিয়মিত আসা-যাওয়া নাট্যপরিচালক হিসেবে। ‘কীর্তনখোলা’, ‘হাত হদাই’য়ের মতো নাটক এ শহরে অভিনীত হয়েছে। ‘বিনোদিনী’র অভিনয় হয়েছে অন্তত বার দশেক। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পূর্ব-পশ্চিম’ উপন্যাসে ‘বাচ্চু’ নামে চরিত্রটি আদতে নাসিরুদ্দিনেরই আদলে।

পরিচালক
নাসিরুদ্দিন ইউসুফ
চিত্রপরিচালনার কাজও নাসিরের নতুন নয়। এর আগে মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করেই ‘একাত্তরের যিশু’ নামে একটি ছবি করেছিলেন তিনি। তা ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশে আরও বেশ কয়েকটি ছবি রয়েছে। জীবন থেকে নেওয়া, ওরা এগারো জন, আগুনের পরশমণি...। তা হলে আবার নতুন করে ‘গেরিলা’ কেন? নাসিরুদ্দিন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চার দশককে সামনে রেখে একটা মহাকাব্যিক ক্যানভাস ধরতে চেয়েছিলাম। দু’একটি চরিত্রের গল্প নয়। এ ছবিতে অনেক ঘটনা, অনেক চরিত্র। গ্রামের লড়াই, শহরের লড়াই। সব মিলিয়ে প্রায় চার হাজার অভিনেতা-অভিনেত্রী।” আরও একটা দিক আছে ‘গেরিলা’য়। ঢাকা-উত্তর মুক্তি বাহিনীর প্রাক্তন কম্যান্ডার নাসিরুদ্দিন মনে করিয়ে দেন, “মেয়েদের লড়াইয়ের কথা এর আগে এই আকারে বলা হয়নি। গেরিলার অন্যতম প্রধান চরিত্র কিন্তু বিলকিস।” বিলকিসও বানানো চরিত্র নয়। সত্য ঘটনা। হাবিবুল ইসলাম, পাক কর্নেল তাজ খান, আলতাফ মেহমুদ সত্যিকার চরিত্রগুলোই উঠে এসেছে নাসিরুদ্দিনের কাহিনিচিত্রে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে এই মুহূর্তে ২৭ সপ্তাহ ধরে চলছে ফিরদৌস ও জয়া আহসান অভিনীত ‘গেরিলা’। এ বারের কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবে এশিয়ার ছবি নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা বিভাগ রয়েছে। ‘গেরিলা’ দিয়েই তার সূচনা হয়েছে। নাসিরুদ্দিন মনে করেন, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র এবং সাংস্কৃতিক অধিকারের যে আদর্শ মুক্তিযুদ্ধের পিছনে ছিল, সেটার বাস্তবায়ন এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাঁর আরও আক্ষেপ, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কবিতা-গান যত হয়েছে, উপন্যাস সে ভাবে লেখা হয়নি। সুতরাং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ‘মহত্ত্ব আর গৌরবকে বাস্তব করে তুলে ধরাই’ লক্ষ্য ছিল তাঁর। ছবিটা হওয়ার পরে কী মনে হচ্ছে? নাসিরুদ্দিন বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে খুব সাড়া পেয়েছি। এটুকুকু বলতে পারি, ছবিটা সৎ ছবি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.