বিনোদন: শেষ দিনে যাব: সৌমিত্র
মমতার পাশে ‘সমাপ্তি’র নায়ক
ধুরেণ সমাপয়েৎ।
কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শুধু যোগ দেওয়াই নয়, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৭ নভেম্বর নন্দনে সমাপ্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকবেন তিনি। শনিবার সৌমিত্র বলেন, “আমি যাব।”
তাঁর সরকারের প্রথম চলচ্চিত্র উৎসবের শুরু থেকেই ‘আমরা-ওরা’র পাঁচিল ভাঙতে চাইছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে কারণে তিনি নিজে বুদ্ধদেববাবুকেও ফোন করে নেতাজি ইন্ডোরে উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। উৎসবের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল মৃণাল সেন, সৌমিত্র সকলকেই। মৃণালবাবু শুক্রবার গিয়েওছিলেন চলচ্চিত্র উৎসব উপলক্ষে সত্যজিৎ রায়ের তোলা স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনে। বাকি ছিলেন সৌমিত্র। আমন্ত্রণের পদ্ধতি নিয়ে ক্ষোভ ছিল তাঁর। রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের বিশেষ সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী এবং উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রঞ্জিত মল্লিক তাঁকে ফোন করেছিলেন। তবু চলচ্চিত্র উৎসব কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমিত্র মনে করেছিলেন, তাঁকে একটি মাত্র কার্ড পাঠানো এবং এই ভাবে ফোন করা ‘অসম্মানজনক।’
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা উৎসবের সংগঠকদের আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই ধরনের উৎসবে কাউকে তিনি ‘দূরে’ রাখতে চান না। বরং চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি জগতকে সার্বিক ভাবে সঙ্গে নিয়ে চলতে চান। তাই আমন্ত্রণের নিয়মকানুন নিয়ে বিতর্ক না তুলে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে উৎসবে সামিল করার জন্য রঞ্জিতবাবুর চেষ্টা চলতেই থাকে।
শুক্রবার বিকেলে মেট্রো সিনেমায় ‘সিনে সেন্ট্রাল’-এর উৎসব উদ্বোধনের আগে দু’জনের কথা হয়। তার পর শনিবার সকালে রঞ্জিতবাবু ফের সৌমিত্রবাবুকে ফোন করে বলেন, “বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে তুমি আমাদের বড়দার মতো। বড় দাদা না এলে উৎসব হয়?” এ দিন বিকেলে তাঁর ‘সম্মতির’ খবর জানিয়ে সৌমিত্রবাবু বলেন, “ওই দিন পুরো সিনেমাটা (রুশ পরিচালক আলেকজান্দার সকুরভের ‘ফাউস্ট’) হয়তো দেখা হয়ে উঠবে না, নাটকের রিহার্সাল আছে। একটু আগেই বেরিয়ে যেতে হবে। কিন্তু থাকব।” রঞ্জিতবাবুর কথায়, “আজ আমার খুব আনন্দের দিন। সৌমিত্রদাকে বলেছি, মঞ্চে ওঁর কাছ থেকে আমরা সিনেমা নিয়ে নানা কথা শুনতে চাই।”
এ নিয়ে ‘অহেতুক’ কোনও রাজনীতি, কোনও ‘আমরা-ওরা’ রাখতে চান না সৌমিত্রবাবুও। তিনি বলেন, “রাজনীতি অন্য ব্যাপার। কিন্তু টালিগঞ্জে তো আমরা একটা পরিবার। সেখানে কোনও দিন বিভাজন ছিল না।”
বিভাজনের একটি সূক্ষ্ম রেখা অবশ্য টেনে ফেলেছেন তৃণমূলেরই দুই অভিনেতা-সাংসদ তাপস পাল ও শতাব্দী রায়। প্রকাশ্যে দুজনেই শু্যটিংয়ে ব্যস্ত থাকার কথা বলেছেন। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁদেরও ক্ষোভ, নিছক আমন্ত্রণপত্র পাঠানো ছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য আলাদা করে কোনও টেলিফোন বা এসএমএস কেউ তাঁদের করেননি। তাঁদের এই মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তাঁদের দলের অন্দরেও।
কিন্তু এ ক্ষেত্রেও সেই একই জিজ্ঞাসা। সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র পাঠানোই কি যথেষ্ট নয়? ব্যক্তিগত ফোন বা এসএমএস করতে হবে কেন? বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করতে আর রাজি নন শতাব্দী। শনিবার তিনি বলেন, “এমন কোনও সমস্যাই হয়নি। ও সব ভুলভাল প্রচার। আমি শু্যটিংয়ে খুব ব্যস্ত। দলের কাজও রয়েছে। তাই সেদিন যেতে পারিনি। দেখি, যদি সময় পাই যাব।”
তাপস পাল ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছেন দিল্লিতে। ফেরার কথা ১৯ নভেম্বর অর্থাৎ চলচ্চিত্র উৎসব শেষ হওয়ার পরে। দিল্লি থেকে ফোনে তিনি অবশ্য এ দিনও প্রথমে আমন্ত্রণের পদ্ধতি নিয়ে নিজের ‘অভিমান’ গোপন করেননি। বলেন, “তথ্য-সংস্কৃতি দফতর থেকে একটি ফোন বা এসএমএস কি আমি প্রত্যাশা করতে পারি না?” কিন্তু কেন এমন আশা করবেন তিনি? তা হলে কি সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের চিঠি পাঠানোর পরেও আবার আলাদা করে ফোন করতে হবে? এটা কি বাঞ্ছনীয় পদ্ধতি হতে পারে? এ বার তাঁর জবাব, “তা অবশ্য ঠিক। আসলে আমি নানা কাজে ব্যস্ত বলেই যেতে পারিনি। কেউ ফোন করলে সেটা অন্তত বলে দিতে পারতাম।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.