নিজস্ব সংবাদদাতা • ফালাকাটা |
রাত সওয়া ১০টা। মঞ্চে হারমোনিয়াম বাজিয়ে শিল্পী গান গাইছেন, ‘সে দিন দুজনে....’। আর সেই গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাচ্ছেন তবলা বাদক। হাতে গোনা শ্রোতা। কেউ গান শুনছেন, কেউ বা আড্ডায় মশগুল। তবে যতজন শ্রোতা মঞ্চের সামনে রয়েছেন তার চেয়ে দ্বিগুণ মঞ্চের পেছনে একটি জায়গায় জটলা বেঁধে রয়েছেন। কারও হাতে ১০০, কারও হাতে ৫০০ টাকার নোট। তাঁদের কারও কান নেই মঞ্চের দিকে। উদ্যোক্তাদের একটাই কাজ, গানবাজনা যেন কোনও মতেই বন্ধ না হয়। সামনে রবীন্দ্র, নজরুল আর পেছনে সমস্বরে চিৎকার চলছে ‘ঝান্ডি, মুন্ডি’ বলে। সেই কালী পুজোর সময় থেকে শুরু হয়েছে। এখন তা শীতকালীন অনুষ্ঠানের মঞ্চের পেছনে। চলছে জুয়ার আসর। বুধবার রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ফালাকাটার বহু বাসিন্দা। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ফালাকাটা শহরে জুয়ার আসর লক্ষ্যণীয় ভাবে বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দা থেকে বিরোধী দল সিপিএমের অভিযোগ, পুলিশের একাংশের মদতে শহরে জুয়ার আসর রমরম করে চলছে। বাসিন্দারা জানান, এবার কালী পুজোয় শহরের কয়েক কোটি টাকার জুয়া খেলা হয়েছে। বেশ কিছু মানুষ জুয়ায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন। পুলিশের একাংশ নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ। সিপিএম নেতা মৃণাল রায়ের অভিযোগ, “পুলিশের যোগসাজশ না থাকলে কিছুতেই জুয়ার আসর বসতে পারে না। এবার ব্যাপক ভাবে জুয়ার আসর বসছে। কালীপুজোয় প্রচুর মানুষ আমাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে ফালাকাটার তৃণমূল নেতা সুরেশ লালার কথায়, “অসামাজিক কাজ কিছুতে বরদাস্ত করা যায় না। পুলিশকে বলা হয়েছে। প্রশাসনের কাজ প্রশাসন করবে।” শহরের বাসিন্দা তথা শিক্ষক রমাপ্রসাদ নাগের কথায়, “সুস্থ সংস্কৃতির আসরে এ ধরণের জুয়ার আসর চলতে পারে না। সমাজ বাদে সংস্কৃতি হয় না। নাগরিক চেতনা গড়ে না উঠলে যা হয় তা ওই ক্ষেত্রে ঘটে। প্রশাসনের তৎপর হওয়া উচিত। সঙ্গে গণপ্রতিরোধ দরকার।” ফালাকাটা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুভাষ সেনগুপ্ত বলেন, “সকলকে সচেতন হতে হবে। এভাবে সংস্কৃতির নামে জুয়ার আসর চলতে পারে না।” ফালাকাটা থানার এক পুলিশ অফিসারের কথায়, “খবর এলেই ব্যবস্থা নিই। পুলিশের নজর এড়িয়ে এই ধরনের ঘটনা কেউ ঘটাতে পারে। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।” |