নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়া |
কাল, শনিবার ঝাড়গ্রামে পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর। আগুইবনি থেকে বিরিহাঁড়ি পর্যন্ত যে রাস্তায় এই পদযাত্রা হওয়ার কথা, বৃহস্পতিবার সেখানেই উদ্ধার হল ৩টি ল্যান্ডমাইন। পরে ‘বম্ব স্কোয়াড’ সেগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে।
ক’দিন আগেই লালগড়ে এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় শুভেন্দুর যাত্রাপথে উদ্ধার হয়েছিল ল্যান্ডমাইন। এ দিন ফের একই ঘটনা ঘটায় তড়িঘড়ি কর্মসূচির যাত্রাপথ বদলে ফেলা হয়েছে। স্থির হয়েছে, আগুইবনি থেকে বিরিহাঁড়ি নয়, বিরিহাঁড়ি থেকে আগুইবনি পর্যন্ত পদযাত্রা হবে। সন্ধের মুখে মাওবাদী প্রভাবিত জঙ্গল ঘেঁষা বিরিহাঁড়িতে (উমাকান্ত মাহাতোর গ্রাম) যাতে না পৌঁছতে হয়, সে জন্যই সিদ্ধান্ত বদল বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “স্থানীয় নেতা ও বাসিন্দারা পদযাত্রার কর্মসূচি স্থির করেছেন। তাঁরা যেমন চাইবেন, সে ভাবেই পদযাত্রা হবে।” ল্যান্ডমাইন উদ্ধারের পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসনও। শনিবারের কর্মসূচি উপলক্ষে আঁটোসাঁটো করা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, অন্য জেলা থেকে সাতশো পুলিশকর্মী নিয়ে আসা হচ্ছে। নেতৃত্বে থাকবেন দু’জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ১০ জন ডিএসপি ও ৩২ জন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার। এলাকায় সিআরপি টহলও চলবে। |
সাম্প্রতিককালে জঙ্গলমহলে একাধিক সভা করে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন যুব-তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু। কাল, শনিবার যুব-তৃণমূলের উদ্যোগেই ‘হিংসার বিরুদ্ধে এবং শান্তি ও উন্নয়নের পক্ষে’ পদযাত্রা হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে ঝাড়গ্রামের নেদাবহড়া অঞ্চলের মাসাংডিহি গ্রামে তৃণমূল প্রভাবিত ‘জন-জাগরণ মঞ্চে’র জমায়েতে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম হন এক জন। এ দিন সকালে নেদাবহড়া অঞ্চলেরই একটি মোরাম রাস্তায় তল্লাশি চালানোর সময় ৩টি ল্যান্ডমাইন উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী। কলাবনি থেকে নেদাবহড়া যাওয়ার ওই মোরাম রাস্তায় মাইন পুঁতে ফাঁদ পাতা হয়েছিল বলে পুলিশের দাবি। মাইনগুলির সঙ্গে লাগানো ছিল ‘টাইমার’। দুপুরে মেদিনীপুর থেকে বম্ব স্কোয়াড এসে মাইন ৩টি নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
এ দিনই পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা ও জেলা যুব-তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী পদযাত্রার প্রস্তাবিত ‘রুট’ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। দেবাশিসবাবুর কথায়, “মাওবাদী-মার্কসবাদীরা একজোট হয়ে মাইন রেখে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা ওদের ‘চ্যালেঞ্জ’ গ্রহণ করছি। ওদের তথাকথিত ঘাঁটি থেকেই পদযাত্রা শুরু করে এলাকাকে সন্ত্রাসমুক্ত করার শপথ নেব আমরা।”
এ দিকে, পুরুলিয়ার বলরামপুর থেকে সন্দেহভাজন দুই মাওবাদীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে অযোধ্যা পাহাড় ও সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশির সময় ঘাটবেড়া গ্রামের অদূরে এক পুকুরপাড় থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “ধৃতেরা হল অনিল হেমব্রম ও নারায়ণ মাণ্ডি। দু’জনেরই বাড়ি ঘাটবেড়ায়। কিছু দিন ধরেই মাওবাদী স্কোয়াডে ছিল এই দু’জন। সেখানে তাদের নাম ছিল সুনীল ও ভীম।” পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, তারা মূলত ‘লিঙ্কম্যান’ হিসেবে কাজ করত। বৃহস্পতিবার ধৃত দু’জনকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক জেল হাজতের নির্দেশ দেন। |