আগাম ‘অনুমতি’ নেই
সিপিএমের লোকাল সম্মেলন বন্ধ করল পুলিশ
গাম অনুমতি নেই, এই যুক্তিতে বর্ধমানের জামালপুরে সিপিএমের লোকাল সম্মেলন মাঝপথে বন্ধ করে দিল পুলিশ। তবে পুলিশের অনুমতি থাকায় তৃণমূলের ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ উদ্যাপন আটকায়নি।
বৃহস্পতিবার জামালপুর থানা এলাকার উচিতপুরে এক দলীয় সমর্থকের বাড়ির উঠোন চট দিয়ে ঘিরে সিপিএমের রায়না পূর্ব লোকাল কমিটির সম্মেলন চলছিল। ১১০ জন প্রতিনিধির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল একটি সাউন্ডবক্স। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই জেলা পুলিশের ডিএসপি (ডি অ্যান্ট টি) শম্ভুনাথ পান বাহিনী নিয়ে গিয়ে সম্মেলন বন্ধ করতে বলেন। সিপিএম নেতারা সাউন্ডবক্স না বাজিয়ে সম্মেলন করার আর্জি জানালেও তিনি তাতে রাজি হননি।
প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্য থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সিপিএম। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাওয়ার আগে আলিমুদ্দিনে দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, “বর্ধমানের যা রিপোর্ট পেয়েছি, তা ভয়ঙ্কর! এমন ঘটনা আগে কখনও হয়নি। এখন অবশ্য অনেক কিছুই প্রথম শুনতে হবে!” সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদারের প্রতিক্রিয়া, “সম্মেলন রুখে দেওয়ার ঘটনা ’৭০-’৭২ সালেও ঘটতে দেখিনি। জামালপুরে আমরা এখনও শক্তিশালী বলেই তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ অগণতান্ত্রিক উপায়ে সম্মেলন বন্ধ করে দিল।”
গোটা রাজ্য জুড়েই এখন সিপিএমের লোকাল সম্মেলন চলছে। কিন্তু প্রায় কোথাওই পুলিশের অনুমতি নেওয়ার চল নেই। জামালপুরের সম্মেলনে অমলবাবু ছাড়াও বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকার হাজির ছিলেন। উদয়বাবুর ব্যাখ্যা, “লোকাল সম্মেলন হয় বন্ধ জায়গায়। তাই এর জন্য আমরা কোনও দিনই প্রশাসনের অনুমতি নিই না। একমাত্র প্রকাশ্য সভার ক্ষেত্রেই অনুমতি নেওয়া হয়।” অমলবাবু যোগ করেন, “জেলায় এ পর্যন্ত ২৬টি লোকাল সম্মেলন হয়ে গিয়েছে। এ দিনই ১২টি লোকাল সম্মেলন ছিল। কোথাও পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়নি। কিন্তু ওই পুলিশ অফিসার কোনও কথা শুনতে চাননি। আমরা পুলিশ সুপারের সঙ্গেও কথা বলেছিলাম। উনিও কোনও কথা শুনতে চাননি।” তাঁর প্রশ্ন, “শুধু জামালপুরেই যত সমস্যা হল?”
বহু চেষ্টা করেও বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিস সরকারের পাল্টা প্রশ্ন, “এত দিন ওঁরা কী ভাবে সম্মেলন করেছেন, তা আমরা শুনব কেন?” জামালপুরের সম্মেলনে সাউন্ডবক্স নয়, মাইক বাজানো হচ্ছিল দাবি করে তিনি বলেন, “ওঁরা পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বৈধ ভাবে যে কোনও দিন সম্মেলন করুন, আমরা আপত্তি করব না।” এ দিন সম্মেলন ভেস্তে যাওয়ার পরে জেলা নেতারা চলে যেতেই স্থানীয় গুনার গ্রামে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তিনটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আহত হন দুই সিপিএম সমথর্র্ক।
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, গুনার মোড়ে ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ পালনের সময়ে সিপিএমের মদতে পুষ্ট দুষ্কৃতীরাই তাদের ১৯ জন কর্মী-সমর্থককে মারধর করে। এক মহিলা-সহ দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।
সিপিএম সূত্রের খবর, হামলার ভয়ে এখন বহু জায়গাতেই চুপচাপ লোকাল বা জোনাল সম্মেলন সেরে ফেলা হচ্ছে। এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রকাশ্য সমাবেশ। তবু বিপত্তি এড়ানো যাচ্ছে না। আরামবাগের মতো কিছু জায়গায় আদৌ সম্মেলন করা যাবে কি না, তা নিয়েও নেতারা সংশয়ে। এ দিন দলের হুগলি জেলা কমিটির বৈঠক উপলক্ষে শ্রীরামপুরে গিয়ে এই পরিস্থিতির কথা শোনেন দলের রাজ্য সম্পাদক। পরে বিমানবাবু বলেন, “যেখানে সম্মেলন করা যাবে না, করব না। যেখানে করা যাবে, করব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.