শ্রমিক অসন্তোষের অভিযোগ তুলে রাতারাতি কারখানার দরজায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্কের’ নোটিস ঝুলিয়ে দিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। বড়জোড়ার ঘুটগড়িয়া এলাকায় ট্রেনের যন্ত্রাংশ তৈরির একটি কারখানায় এই ‘নোটিস’ বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা দেখেন। এরপরে ওই কারখানার প্রায় ৩৫০ জন শ্রমিকের কাজ হারানোর আতঙ্কে মাথায় হাত পড়েছে। কারখানাটি চালু করার দাবিতে স্থানীয় তৃণমূল ও সিপিএম নেতৃত্ব সরব হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন কারখানার মূল দরজায় তালা ঝুলছে। সেখানে নোটিস টাঙানো রয়েছে। উল্লেখ করা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছে। তার জেরেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। কারখানার শ্রমিক রঞ্জিত ভট্টাচার্য, উত্তম ঘোড়ুই, মুরলি মণ্ডলরা বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে আমরা এই কারখানায় কাজ করছি। হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ হয়ে গেল। এ বার আমরা সংসার চালাব কী করে?” কারখানা কর্তৃপক্ষের তোলা শ্রমিক অসন্তোষের অভিযোগ তাঁরা মানতে চাননি। কারখানার দরজার সামনে শ্রমিকেরা বিক্ষোভও দেখান। সেখানে যান বড়জোড়ার তৃণমূল নেতা অলোক মুখোপাধ্যায় ও সিপিএমের বড়জোড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক তরুন রাজ। তাঁরা বলেন, “আমরা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কারুর সঙ্গে আলোচনা না করে হঠাৎ করে এ ভাবে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া একপ্রকার অপরাধ।” তাঁরা এ ব্যাপারে বড়জোড়ার বিডিওকে সমস্যা সমাধানের জন্য লিখিতভাবে আর্জি জানিয়েছেন।
কারখানার কর্ণধার কৃষ্ণকুমার রুংতা অভিযোগ করেন, “দীর্ঘদিন ধরে কারখানার শ্রমিকেরা ঠিকভাবে কাজ করছেন না। উল্টে তাঁরা বেতন বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছিলেন। গত দু’সপ্তাহে সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছিল। এ ভাবে কারখানা চালানো সম্ভব নয়। তাই আমরা কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” বড়জোড়ার বিডিও দেবারতি সরকার বলেন, “কারখানা বন্ধ করার ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষ আগাম কিছু জানায় নি। এ দিন শ্রমিকরা লিখিতভাবে বিষয়টি আমাকে জানায়।” তিনি জানান, চিঠিটি বাঁকুড়ার অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের কাছে তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন। অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার ধনঞ্জয় গুহ বলেন, “কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক করে ফের কারখানাটি চালু করার চেষ্টা করা হবে।” |