|
|
|
|
ডানকুনিতে রেলের কারখানার কাজ শেষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ডানকুনি |
উদ্বোধনের দিন গুনছে ডানকুনির রেলের কারখানা। ডিজেল ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ তৈরির ওই কারখানার কাজ শেষ। ফেব্রুয়ারিতেই উৎপাদন চালু হয়ে যাবে বলে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের জন্য যে-সব প্রকল্পের শিলান্যাস করেন, তার মধ্যে এটির কাজই সবার আগে শেষ হল।” বৃহস্পতিবার রেলের এক পরিদর্শকদল কারখানাটি ঘুরে দেখেন। কল্যাণবাবুও ছিলেন তাঁদের সঙ্গে। |
|
উৎপাদন শুরু হবে কিছু দিনের মধ্যেই। ডানকুনির রেলের কারখানা। নিজস্ব চিত্র |
রেল সূত্রের খবর, ২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্পটি তৈরি করছে রেল বিকাশ নিগম। ২০০৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পটির শিলান্যাস করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রকল্পটি তৈরির কাজ শুরুতেই ধাক্কা খায় সিপিএমের আন্দোলনের জেরে। ওই প্রকল্পের জমিতে ১৬০ জন জবরদখলকারী ছিলেন। তাঁদের পুনর্বাসনের দাবিতে রেল কলোনি উচ্ছেদ কমিটি গড়ে তোলা হয়। সিপিএমের বিধায়কেরা সেখানে মিছিল করেন। পাল্টা পথে নামে তৃণমূল। পুনর্বাসনের বিষয়টি যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেই জন্য দলের তরফে রেল-কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উদ্যোগী হন। পুনর্বাসনের জায়গা করে দিতে প্রকল্পের নকশায়ও কিছু পরিবর্তন করা হয়। পুনর্বাসনের বিষয়টি মিটে আসতেই সিপিএম ফের দাবি করে, ওই প্রকল্পে জলাভূমি বোজানো হচ্ছে। ওই জলাভূমি বোজালে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে দাবি করা হয়। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সাময়িক ভাবে ওই কাজের উপর স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। পরে অবশ্য আদালত ওই প্রকল্পের উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। শেষ পর্যন্ত রেলই ওই এলাকার নিকাশির জন্য প্রয়োজনীয় নালা করে দেয়। এর পর অবশ্য আর ওই প্রকল্পের কাজে কোনও বাধা আসেনি।
রেল সূত্রের খবর, ডানকুনিতে তৈরি কারখানাটির নাম দেওয়া হয়েছে ডিজেল লোকো কম্পোনেন্ট কারখানা। ওই কারখানায় লোকো ডিজেল ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হবে। সেখানে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে প্রশাসনিক ভবন, স্টোর, কারখানার শেড, কারখানার কাজ তদারকির জন্য নির্দিষ্ট ভবন, নিরাপত্তা রক্ষীদের ভবন। ঝাঁ চকচকে কারখানার শেডে ইতিমধ্যেই নানা যন্ত্রপাতি এসে গিয়েছে। অপেক্ষা কাজ শুরুর। রেলের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের চিফ প্রজেক্ট ম্যানেজার রাজেশ প্রসাদ বলেন, “চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্দিষ্ট ছিল। আমরা কাজটি তার মধ্যেই শেষ করতে পেরেছি।”
ওই প্রকল্পটি চালু হলে সেখানে বেশ কিছু কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় এলাকায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, প্রকল্পটি চালু হলে অতিরিক্ত যানবাহনের জন্য যানজট হবে। কিন্তু সেই আশঙ্কা যে অমূলক ছিল তা প্রকল্পের কাজ শেষ হতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ, ওই কারখানার গাড়ি যাতায়াত করার জন্য নিজস্ব চার লেনের দু’কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করে মুম্বই রোডের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। ওই প্রকল্পের সমস্ত গাড়ি ওই পথেই যাতায়াত করবে। |
|
|
|
|
|