পুলিশে বদল হতেই গতি বৃদ্ধি হাওড়ার
হাওড়ায় পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার পরে শুধু ট্রাফিক-বিধি লঙ্ঘনের জরিমানা থেকেই দু’মাসে পুলিশের আয় হয়েছে ৭০ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে আয় হয়েছে ৩০ লক্ষ টাকা। অক্টোবরে ৪০ লক্ষ।
শুধু হাওড়া শহরের আটটি থানা এলাকায় গাড়িচালকদের জরিমানা করে দু’মাসের মধ্যে পুলিশের এত টাকা আয় কার্যত নজিরবিহীন। হাওড়া সিটি পুলিশের দাবি, গত পাঁচ বছরের হিসেবে গোটা জেলায় বছরে যেখানে ট্রাফিক থেকে আয় হত গড়ে ২২ থেকে ২৬ লক্ষ টাকা, সেখানে মাত্র দু’মাসে এত টাকা জরিমানা আদায় কার্যত দু’টি বিষয়কে সামনে এনে দিয়েছে। প্রথমত, এত চালককে জরিমানা করায় প্রমাণ হয়েছে, আগে শহরে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কেউ ট্রাফিক আইনের পরোয়া করতেন না। তাঁরা সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও রাখতেন না। মোটরবাইক চালানোর সময়ে পরতেন না হেলমেটও। দ্বিতীয়ত, ট্রাফিক আইন না মানলে চালকদের আগে জরিমানা করা হত না। ফলে বেপরোয়া ভাবে স্কুটার, মোটরবাইক, গাড়ি, ট্যাক্সি, বাস, লরি চলাচল করত। কিন্তু গত দু’মাসে ট্রাফিকের নতুন ব্যবস্থা হাওড়ার সামগ্রিক চিত্রটাকেই বদলে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত দু’মাসে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় হেলমেট না পরে গাড়ি চালানোর জন্য আট হাজার মোটরবাইক চালককে ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা লাইসেন্স দেখাতে না পারার জন্য দুই থেকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বহু গাড়িকে। বেআইনি পার্কিং, একমুখী রাস্তা না মানার জন্য জরিমানা হয়েছে আরও কয়েক হাজার চালকের।
হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়ায় কমিশনারেট ঘোষণা করার পরে পুলিশকে প্রথমেই দু’টি বিষয় দেখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথমত, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি এবং দ্বিতীয়ত, যানজট কমানো। সিটি পুলিশের দাবি, তাঁরা দু’টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে হাওড়ায় যান চলাচলের সামগ্রিক ছবি পাল্টে দিয়েছেন। দক্ষিণ হাওড়ার কাজিপাড়া মোড় থেকে হাওড়া পৌঁছতে যেখানে আগে লাগত এক ঘণ্টা, সেখানে এখন পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে আধ ঘণ্টায়। অন্য দিকে, বালি থেকে সালকিয়ার যানজট কাটিয়ে হাওড়া আসতে দেড় ঘণ্টা সময় কমে দাঁড়িয়েছে এক ঘণ্টায়।
হাওড়া সিটি পুলিশের জন্য যে শহরের ট্রাফিক গতি পেয়েছে, তা মানছেন মধ্য হাওড়ার বাসিন্দা, পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি বলেন, “ট্রাফিকের এই উন্নতি দেখে আমি সত্যিই খুশি। এই রিপোর্ট আমি কলকাতা হাইকোর্টকে জানাব। বলতে দ্বিধা নেই, হাওড়ার পুলিশ কমিশনারেট এ ক্ষেত্রে ভাল কাজ করেছে।”
একই মত হাওড়ার মেয়র মমতা জয়সোয়ালেরও। তিনি বলেন, “মানুষ এমন ট্রাফিক ব্যবস্থাই চেয়েছিলেন। শহরে যানবাহনের গতি বাড়লে তাতে সবাই উপকৃত হবেন। তবে, ট্রাফিক ব্যবস্থার আরও উন্নতি প্রয়োজন। এ জন্য আমরা সব রকম ভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত।”
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতিতে আরও কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যেমন, খারাপ ট্রাফিক সিগন্যাল সারানো, জেব্রা ক্রসিং-সহ রাস্তার বিভিন্ন অংশ ‘মার্কিং’ করা, হাওড়া স্টেশনের কাছে বেআইনি আইল্যান্ড ভাঙা, ‘নো পার্কিং’ এবং ‘নো এন্ট্রি’ কঠোর ভাবে মানতে বাধ্য করা, জি টি রোডে রিকশাকে একমুখী করা, বেআইনি পার্কিং ও বেআইনি ট্যাক্সি স্ট্যান্ড তুলে দেওয়া, রাস্তায় বালি বা স্টোনচিপ্স ফেললে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা করা ইত্যাদি।
হাওড়া পুলিশের ডি সি (ট্রাফিক) অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, “হাওড়ার ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও উন্নতি করতে হলে আমাদের হাওড়া পুর-কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন। এ নিয়ে আমরা শীঘ্রই মেয়র মমতা জয়সোয়ালের সঙ্গে বৈঠকে বসব। তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরেই কাজ শুরু হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.