|
|
|
|
বাইরে যেতে পারছেন না, কারাটকে এ বার চিঠি বুদ্ধের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে শারীরিক অসুস্থতার জন্য উপস্থিত থাকতে না-পারায় ‘দুঃখপ্রকাশ’ করে সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটকে চিঠি পাঠালেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে সিপিএমের বিপর্যয়ের পর থেকে কলকাতায় একটি মাত্র পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ছাড়া বাইরে দলের কেন্দ্রীয় স্তরের কোনও বৈঠকেই যোগ দিতে যাননি বুদ্ধবাবু। দলের তরফে বুদ্ধবাবুর অসুস্থতার কথাই বারেবারে বলা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে লাগাতার চর্চা এবং বিতর্ক চলতে থাকায় বুদ্ধবাবু এ বার কারাটকে লিখিত ভাবে তাঁর অনুপস্থিতির কারণ জানিয়ে দিলেন।
পার্টি কংগ্রেসের প্রস্তুতির জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক আজ, শুক্রবার থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে। দলের মতাদর্শগত দলিল ‘সময়োপযোগী’ করার প্রক্রিয়া নিয়ে সেই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। শরীর সুস্থ থাকলে এই বৈঠকে থাকার জন্য কলকাতায় এসে বুদ্ধবাবুকে সামনাসামনি অনুরোধ করে গিয়েছিলেন কারাট। কিন্তু বুদ্ধবাবু এই বৈঠকেও যেতে পারেননি। সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যায়, কারাট এসে অনুরোধ করে গিয়েছিলেন বলেই বুদ্ধবাবু ‘প্রতি-সৌজন্য’ দেখিয়ে তাঁর অনুপস্থিতির কারণ লিখিত ভাবে সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি রওনা হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিনে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, “বুদ্ধদেবের শরীর ভাল নেই। ট্রেনে বা বিমানে যাওয়া তাঁর পক্ষে এখন সম্ভব নয়। সাধারণ সম্পাদককে তিনি সেই ব্যাপারে চিঠিও দিয়েছেন।”
বুদ্ধবাবু চিঠি দিয়ে অনুপস্থিতির কারণ জানিয়ে দিলেও তাঁকে ঘিরে বিতর্ক পার্টি কংগ্রেসের আগে মিটে যাবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় থাকছেই সিপিএমের অন্দরে। সিপিএমের জনভিত্তি আরও প্রসারিত করার জন্য নতুন কিছু বিষয় বিবেচনার মধ্যে এনে দলকে আরও ‘উদার’ করার প্রস্তাব দিয়ে যে ‘নোট’ বুদ্ধবাবু পলিটব্যুরোয় পাঠিয়েছিলেন, তা নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে আলোচনা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে বিতর্কও রয়েছে।
এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির একাংশ আবার চায়, বুদ্ধবাবু যখন শারীরিক অসুস্থতার জন্য কলকাতার বাইরে বৈঠকে যোগ দিতেই পারছেন না, তখন তাঁকে পলিটব্যুরোর ‘আমন্ত্রিত’ সদস্য হিসাবে রাখার কথা ভাবা হোক। বিশেষত, নির্বাচনী বিপর্যয়ের ‘দায়’ নিয়ে তিনি নিজেই যখন পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। শারীরিক কারণেই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বুদ্ধবাবুর অনুপস্থিতি এই আলোচনায় কোনও মাত্রা সংযোজন করে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে দলের অন্দরেই।
পরিস্থিতি এবং বৈঠকের ‘গুরুত্ব’ বিবেচনা করে এ বার তিনি দিল্লি আসতে চান কি না, সেই খোঁজ নিতে কারাটের কলকাতা সফরের পরেও পলিটব্যুরোর তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।
কিন্তু বুদ্ধবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পক্ষে কলকাতার বাইরে যাওয়া এখন সম্ভব নয়। বুদ্ধবাবুর লাগাতার অনুপস্থিতি ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর একাংশের মধ্যেও ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। সম্মেলন উপলক্ষে আগামী মাসে নদিয়া, বর্ধমান-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় যাওয়ার কথা রয়েছে বুদ্ধবাবুর। দিল্লিতে নেই কিন্তু জেলা-সফরে বেরোচ্ছেন এই ঘটনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে ফের না ক্ষোভ উস্কে ওঠে, আশঙ্কা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশের। |
|
|
|
|
|