বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলে অসুস্থ ছাত্রী অলকা মিশ্রকে বাড়ি নিয়ে গেলেন তাঁর বাবা, বার্নপুরের বাসিন্দা গণেশ মিশ্র। এ দিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে অলকা যে হস্টেলে থাকতেন, সেই গার্গী হস্টেলের প্রায় ৫০ জন আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য দেবীদাস মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করে অলকার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করেছেন।
বুধবার রাত ৮টা নাগাদ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দি বিভাগের ওই ছাত্রীকে রাধারানি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে শুয়েই তিনি অভিযোগ করেন, গার্গী হস্টেলে দ্বিতীয় বর্ষের তৃতীয় সেমেস্টারের কিছু ছাত্রী তাঁকে নিগ্রহ করছিল। তা সহ্য করতে না পেরেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।
বৃহস্পতিবার সকালে হাসাপাতালে দাঁড়িয়ে গণেশবাবু বলেন, “আমি আমার মেয়েকে আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠাব কি না, তা ভাবতে হবে। যেখানে এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হয়, আর কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেন না, সেখানে তো কোনও ছাত্র-ছাত্রীই নিরাপদ নয়।” মেয়ের বিরুদ্ধে হস্টেলের সহ-আবাসিকদের জিনিসপত্র চুরির যে অভিযোগ উঠেছিল, সে বিষয়ে তাঁর মন্তব্য, “আমরা মোটেও ভিখারি নই, যে মেয়েকে চুরি করতে হস্টেলে পাঠাব।” তবে অলকার পরিবারের সদস্যেরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র এ দিন সংবাদমাধ্যমকে অলকার সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেন। তাঁদের দাবি, সংবাদমাধ্যমের জন্যই বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জলঘোলা হচ্ছে।
ওই হস্টেলের কিছু ছাত্রীর দাবি, চুরির ভয়ে আবাসিকেরা তটস্থ হয়েছিল। শেষে হস্টেলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ঝুমু ঘোষ অলকাকে শনিবার বাড়ি গিয়ে অভিভাবককে ডেকে নিয়ে আসতে বলেন। ঝুমু দেবীও এ কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘অলকা প্রায়ই অন্যদের জিনিসপত্র চুরি করত বলে অভিযোগ পেতাম। তাই ওকে বলি বাড়ি গিয়ে বাবাকে এখানে ডাকতে। কিন্তু শনিবারের পরে ও কখন হস্টেলে এল, কখনই বা অন্যেরা ওকে মারধর করল, তা জানি না।” দেবীদাসবাবু বলেন, “আমরা দু’টি ঘটনা নিয়েই তদন্ত করব বলে আগেই সহ-উপাচার্য জানিয়েছেন। তিনি আপাতত দিল্লিতে। ফিরে এলেই তদন্ত শুরু হবে।” |