বেশি দামে সার বিক্রি, ‘শো-কজ’ সমবায় সমিতিকে
নির্ধারিত নতুন দাম নিয়ে, পুরনো কম দামের বস্তার সার বিক্রির অভিযোগ উঠল মন্তেশ্বরের কুলজোড়া কৃষি উন্নয়ন সমিতির বিরুদ্ধে। চাষিদের এই অভিযোগের ভিত্তিতে সমবায় সমিতির সারের গুদাম ‘সিল’ করে দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। ওই সমিতিকে শো-কজও করা হয়েছে।
সমবায়ের ম্যানেজার প্রদীপ সামন্ত অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “আমাদের হাতে ইফকোর এন পি কে ১০:২৬:২৬ সারের দু’ধরনের দামের বস্তা রয়েছে। একটির দাম ৭০৭ টাকা ২০ পয়সা। অন্যটির দাম ৮৩২ টাকা। সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে আমাদের সদস্যদের পুরনো দামের সার ও সাধারণ চাষিদের নতুন দামের সার বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই এই অভিযোগটি অতিরঞ্জিত।’’ তবে মন্তেশ্বরের অ্যাসিস্টান্ট ডিরেক্টর অফ এগ্রিকালচার (এডিও) রঙ্গন ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা তদন্ত করে জানতে পেরেছি, চাষিদের কাছ থেকে নতুন সারের মূল্য নিয়ে পুরনো কম মূল্যের সারের বস্তা দেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয় বনপুর গ্রামের চাষি লুৎফার মোল্লা অভিযোগ করেন, তিনি এবং স্থানীয় আনসার মণ্ডল ওই সমবায় থেকে ইফকোর এন পি কে ১০:২৬:২৬ সার কিনতে গিয়েছিলেন গত ৪ নভেম্বর। তাঁদের কাছ থেকে প্রতি বস্তার দাম নেওয়া হয় ৮৪৫ টাকা হিসেবে। কিন্তু সার নিতে গুদামে গিয়ে দেখেন, ওই গুদামে প্রচুর সারের বস্তা মজুত রয়েছে যার গায়ে ৭০৭ টাকা ২০ পয়সা দাম লেখা রয়েছে। তাঁদের দাবির, তাঁরা ম্যানেজারের কাছে গিয়ে, কেন অতিরিক্ত দাম নেওয়া হয়েছে এই প্রশ্ন করায় ম্যানেজার বলেন, সমিতির অন্যান্য খরচ নির্বাহ করার জন্য অতিরিক্ত দাম নেওয়া হচ্ছে।
একই অভিজ্ঞতা বনপুরের চাষি হাসান বড়া, গুলজার শেখ ও বামুনিয়ার চাষি রাজীবকুমার ঘোষেরও। তাঁদের দাবি, গুদামে প্রচুর কম দামের সার মজুত থাকা সত্ত্বেও ‘সারের দাম বেড়েছে’ এই অজুহাতে বেশি দামের বস্তা কিনতে বাধ্য করানো হয়েছে সমিতির তরফে। মন্তেশ্বরের তৃণমূলের নেতা বিনয় ঘোষের দাবি, ওই এলাকার অনেকগুলি সমবায় সমিতিই চাষিদের কাছে থেকে সারের দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত দাম নিয়ে সার বিক্রি করে চলেছে। কুলজোড়া কৃষি সমবায়ের বিরুদ্ধে চাষিদের অভিযোগ পেয়ে তিনি তাঁদের নিয়ে বিডিও, এডিও-র দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়ে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা তদন্তের নির্দেশ দেন।
ইফকো বা ইন্ডিয়ান ফার্মার্স ফার্টিলাইজার কো-অপারেটিভের বর্ধমান জেলার সিনিয়র ম্যানেজার অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “১০:২৬:২৬ এন পি কে সারের দাম গত ২৪ অক্টোবর থেকে বেড়েছে। কিন্তু তার আগে সমিতিগুলিকে বৈঠকে ডেকে বলে দেওয়া হয়েছিল, আগে পুরনো মজুত সার বিক্রি করতে হবে। এই ব্যাপারে ক্রেতা সম্পর্কে কোনও বাছ-বিচার করা চলবে না। কোনও মতেই যাতে নতুন দাম নিয়ে পুরনো সারের বস্তা চাষিদের না দেওয়া হয়, এই ব্যাপারেও সতকর্র্ করা হয়েছিল। ওই সমিতির এই কাজ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
এডিও রঙ্গনবাবু বলেন, “গত ৫ নভেম্বর ওই সমবায়ের বিরুদ্ধে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু করে গুদাম সিল করে দেওয়া হয়েছে। সমিতিটিকে শো-কজও করে দেওয়া হয়েছে। শো-কজের জবাব এবং তদন্তের রিপোট কালনা মহকুমা কৃষি আধিকারিকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা ওই দফতরই নেবে।” তিনি আরও জানান, তদন্তে ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে, ওই সমবয়টি কম দামের সার নিজেদের সদস্যদের দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলেও, চাষিদের বেশি দামের রসিদ কেটে, কম দামের সারের বস্তা সরবরাহ করছে। নিয়ম অনুযায়ী, সার বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের হাতে যতক্ষণ কম দামের সার থাকবে, চাষিদের ওই সারই দিতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.