এ বছর বজ্রপাতে ৭ জন, জলে ডুবে ১০ জন এবং সাপের কামড়ে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে মালদহে। বন্যায় মাটির বাড়ি ভেঙেছে প্রায় ৩০ হাজার। কিন্তু রাজ্য সরকার কেবলমাত্র সাপে কাটায় মৃত তিনজনের ক্ষতিপূরণ বাবদ তিন লক্ষ টাকা পাঠানোয় বিপাকে পড়েছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি, ক্ষতিপূরণের টাকা কোন তিনজনকে দেওয়া হবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। শেষ পযর্ন্ত ঠিক হয়েছে, সাপের কামড়ে যিনি আগে মারা গিয়েছেন তার পরিবার আগে ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। কেননা, ওই ক্ষতিপূরণের পাঠানো টাকার তালিকায় কারও নাম নেই। অবশ্য বন্যায় জেলার ৯টি ব্লকে প্রায় ৩০ হাজার মাটির বাড়ি ভেঙে গেলেও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা এখনও জেলা প্রশাসন তৈরি করতে পারেনি। রাজ্য সরকার ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাড়ির তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছিল। ওই নিদের্শের সময় সীমা দেড় মাস আগে পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি না-হওয়ায় দুগর্তদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। জেলাশাসক শ্রীমতি অচর্না বলেন, “বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাড়ি তালিকা সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিওদের দ্রুত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্লক থেকে উপভোক্তাদের তালিকা এলেই তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর জেলায় বন্যায় জেলার ৯ টি ব্লক বন্যা কবলিত হয়। যার মধ্যে রতুয়া-১, হরিশ্চন্দ্রপুর-২, মানিকচক, কালিয়াচক-২ ও ৩ নম্বর ব্লকে ক্ষতির পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি। ৯টি ব্লকে প্রায় ৩০ হাজার মাটির বাড়ি ভেঙে যায়। যাদের সম্পূর্ণ বাড়ি ভেঙেছে তারা পাবেন ২৫ হাজার টাকা। যাদের আংশিক বাড়ি ভেঙেছে তাঁরা পাবেন ৫ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির জন্য প্রতিটি ব্লকে চারজনের কমিটি গড়া হয়েছে। যে কমিটিতে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও’র প্রতিনিধি, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির প্রতিনিধি, বিরোধী দলনেতার প্রতিনিধি রয়েছেন। এখন পর্যন্ত একটি ব্লক ও বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া বাড়ি তালিকা তৈরি করতে পারেনি। তালিকা তৈরি দূরের কথা এখনও পর্যন্ত বেশির ব্লকের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কমিটি বৈঠকেই বসতে পারেনি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, উৎসবের মরসুমের জন্য ব্লকের ওই কমিটিগুলি বৈঠক করতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরিতে জেলা ও ব্লক প্রশাসনের ঢিলেমিতে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস ও সিপিএম। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রিয় সাহা বলেন, “এখনও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাই হয়নি। ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি করে সরকারের কাছে না পাঠালে কংগ্রেস আন্দোলনে নামবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “জেলা প্রশাসনের অপদার্থতার জন্য এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা যায়নি।” |