ইসলামপুর প্রাইভেট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত সময়সূচি অমান্য করার বাস চালানোর অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামলেন উত্তরবঙ্গের চার জেলার বাস মালিকেরা। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ইসলামপুর পুরসভা বাস টার্মিনাস বয়কট। দার্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ জেলা এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বাস মালিকদের একটিও বাস এ দিন ওই টার্মিনাসে ঢোকেনি। বিভিন্ন দূরপাল্লার বাস ইসলামপুর শহরের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ওঠানামার কাজ করে। ফলে একদিকে যেমন যানজটের কবলে পড়ে জাতীয় সড়ক। অন্যদিকে বাস ধরার জন্য যাত্রীরা নাকাল হন। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন উত্তর দিনাজপুরের পরিবহণ আধিকারিক তপন মল্লিক বলেন, “ইসলামপুর ও চার জেলার বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। নির্দিষ্ট সময়সূচী মেনে বাস চালানোর জন্য কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট ও মালদহ রুটের শতাধিক বেসরকারি বাস ইসলামপুর হয়ে চলাচল করে। গত ২০০৪ সালে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার চার জেলার বাস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন রুটে বাস চলাচলের সময়সূচি নির্দিষ্ট করে দেন। এর পরে একই বিষয় নিয়ে ২০১০ সালের ২ জুলাই ইসলামপুর মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা বাস মালিকদের সঙ্গে সভা করেন। ওই সিদ্ধান্তের পরে চার জেলার বাস মালিকরা সময়সূচি মেনে বাস চলাচল ঠিক রাখার কাজ তদারকির জন্য চেন কর্মীদের বেতন বাবদ ইসলামপুর প্রাইভেট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনকে মাসে ১১ হাজার ৬৭৫ টাকা দেন। কিন্তু সম্প্রতি বিরোধের জেরে চার জেলার বাস মালিকরা ওই টাকা দেওয়া বন্ধ করেন। উত্তর দিনাজপুর বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক চন্দ বলেন, “ইসলামপুর মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা সময়সূচী কিছুই মানছে না। খুশি মতো বাস চালাচ্ছে। ফলে আমরা সঙ্কটের মুখে পড়েছি। সমস্যা কথা কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।” এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে ইসলামপুর প্রাইভেট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার সম্পাদক উদয় ভৌমিক বলেন, “সময়সূচি নিয়ে চার জেলার বাস মালিকদের সঙ্গে সাময়িক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে বাস চলছে। এর পরেও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে যাত্রী পরিষেবা বেহাল করা হচ্ছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা রায়গঞ্জ পুরসভার টার্মিনাসে বাস নেব না।” ইসলামপুর প্রাইভেট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তারা ওই বক্তব্যকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে দার্জিলিং ওয়েস্ট দিনাজপুর ইন্টার রিজিওনাল মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার সম্পাদক প্রতাপ সাহা বলেন, “আমরা ঠিক করেছি যতদিন না ইসলামপুর প্রাইভেট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা সময়সূচী অমান্য করে বাস চলানো বন্ধ করছেন ততদিন দার্জিলিং জেলার কোনও বাস ইসলামপুর টার্মিনাসে ঢুকবে না।” একই বক্তব্য মালদহ বাস ও মিনি বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েন এবং বালুরঘাট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের। ওই দুই সংস্থার সদস্যদের বাসও ইসলামপুর টার্মিনাসে ঢুকছে না। বালুরঘাট মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক অশোক চৌধুরীর অভিযোগ, “বাস মালিকরা ইচ্ছা মতো বাস চালাচ্ছেন। আমাদের বাস সময় মতো ইসলামপুর টার্মিনাসে না পৌছলে তোলা আদায় করা হচ্ছে। এটা চলতে পারে না।” |