৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে প্রথম উত্তরবঙ্গ উৎসব। রাজ্য সরকার আয়োজিত এই উৎসবের মূল লক্ষ্য উত্তরবঙ্গের ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়ন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রক আয়োজিত প্রথম বারের এই উৎসব যৌথ ভাবে আয়োজিত হবে শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে। ৬ দিন ধরে প্রতিদিন শিলিগুড়ি মহকুমা এবং জলপাইগুড়ি জেলার ১২টি মঞ্চে একসঙ্গে অনুষ্ঠান চলবে। প্রতি বছরই দুটি করে জেলা নিয়ে উৎসবের আয়োজন করা হবে। যার প্রস্তুতি থেকে শুরু করে যাবতীয় বিষয়কে ‘ওঁরা-আমরা’র বৃত্তের বাইরে রাখা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার যার প্রথম ইঙ্গিত মিলেছে জলপাইগুড়িতে। জেলায় কীভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা হবে, কোন মঞ্চে অনুষ্ঠান হবে এবং উৎসব কমিটিতে কারা থাকবেন সে সব স্থির করতে বুধবার জলপাইগুড়িতে এসজেডিএর সভা ঘরে বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী গৌতম দেব। |
বৈঠকে আমন্ত্রিত ছিলেন জেলার সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া জগতের প্রতিনিধি-সহ আমজনতাও। প্রায় দু’ঘন্টারও বেশি সময় ধরে মন্ত্রী বৈঠক করেছেন। বিদ্বজ্জন থেকে শুরু করে সাধারণ বাসিন্দা, সকলের পরামর্শ শুনে খাতায় নোট করেছেন। বৈঠকের শেষে মন্ত্রী নিজের আসন ছেড়ে উঠে গিয়ে উপস্থিত ব্যক্তিদের সঙ্গে জনে জনে কথা বলেন। কেউ গান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, কেউ বা নিজের দলের নাটক মঞ্চস্থ করতে আগ্রহী। সকলের নাম গৌতমবাবু লিখে নেন। নিজের মোবাইল নম্বর সকলকে দিয়ে পরে যোগাযোগ করতেও বলেছেন। সর্বোপরি উৎসবের কমিটিতে কারা থাকবেন তা স্থির করার দায়িত্বও উপস্থিত সকলকে দিয়ে বলেন, “আপনারা যাঁরা আজকে এসেছেন, সকলেই থাকলেন কমিটিতে। আরও যাঁরা থাকতে চান, তাঁরাও থাকবেন। একটি কোর কমিটি গঠন করতে হবে। আপনারাই সেটা করে দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমায় পাঠিয়ে দেবেন।” বৈঠকের শেষে শহরের এক বামপন্থী বিদ্বজ্জন বলে পরিচিত নাট্য ব্যক্তিত্ব বলেই বসলেন, “এতদিন অনেক সরকারি অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থেকেছি। কিন্তু এমন খোলামেলা ভাবে কোনও দিন আলোচনা হয়নি। কমিটি তৈরি তো অনেক দূরের বিষয়।” বৈঠকের শেষে মন্ত্রী গৌতমবাবু সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতেই উত্তরবঙ্গ উৎসবের সূচনা। উন্নয়ন মানে তো শুধু রাস্তা বা শিল্প পরিকাঠামোর উন্নতি নয়, মানব সম্পদ উন্নতিও উন্নয়নের একটি অপরিহার্য অঙ্গ। সে কারণেই উত্তরবঙ্গ উৎসবের আয়োজন। এই উৎসব সকলকে নিয়ে, সকলের জন্য, সংস্কৃতির বা খেলার কোনও রঙ হয় না।” সরকারি সুত্রের খবর সরকারি অনুষ্ঠানের পরিচিত ‘একঘেয়েমি’ এড়াতে পেশাদারি ঢঙেই আয়োজন করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ উৎসবের। তৈরি হচ্ছে একটি আকর্ষণীয় লোগো। প্রচারে রুচি-মননশীলতাকে বজায় রেখে আকর্ষণীয় পেশাদারি কায়দায় উৎসবের হোর্ডিং লাগানো হবে উত্তরবঙ্গে ছয় জেলাতেই। চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ-সহ শিল্প সংস্কৃতির জগতের খ্যাতনামারা এই উৎসবের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। গান, নাটক, সিনেমা. যাত্রা থেকে শুরু করে ক্রিকেট, ভলিবল বিভিন্ন খেলাও থাকবে। বৈঠকে জলপাইগুড়ি বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা, আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়ও ছিলেন। |