হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ,তদন্তের নির্দেশ |
২৪ ঘণ্টায় ছয় শিশুর মৃত্যু |
২৪ ঘন্টায় মালদহ সদর হাসপাতালে ৬ জন শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে রোগীর পরিবারের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে ৬ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “মালদহ সদর হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সদর হাসপাতালের সুপারে কাছে শিশু মৃত্যুর রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কারও গাফিলতি জেরে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সদর হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি আড়ি দাবি করেছেন, “গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে যে ৬টি শিশুর মৃত্যু হয় তাদের বেশির ভাগই কম ওজন নিয়ে জন্মায়। কারও ওজন ৯৫০ গ্রাম ছিল, কারো ওজন ছিল ১ কেজি ২০০গ্রাম। তার উপরে ওই ৬টি শিশুই শ্বাসকষ্ট ও ব্রঙ্কোনিমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল। শিশুদের বাঁচাতে চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। ওই শিশুগুলির মৃত্যুর পিছনে কারও গাফিলতি নেই।” জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে কালিয়াচকের আসকারা বিবি একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। কয়েক ঘন্টা বেঁচে থাকার পর মঙ্গলবার সকালে তাঁর শিশুকন্যাটি মারা যায়। ওই দিন রাত ১০ টায় মালদহ শহরের মহানন্দা পল্লির ঝর্ণা সরকার পুত্র সন্তান প্রসব করেন। ৮ ঘন্টার পরই তাঁর সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়। বামনগোলার রুপচাঁদ ওঁরাও বুধবার সকাল ৮ টায় তার ৯ মাসের শিশু পুত্রকে মালদহ হাসপাতালে ভর্তি করার ১৫ মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। এদিনই সকাল ৯টায় মানিকচকের লক্ষণ মন্ডল চার মাসের শিশু পুত্রকে ভর্তি করেন। একঘন্টার পরই ওই শিশুটির মৃত্যু হয়। মানিকচকের কামালপুরের নরেন্দ্র মন্ডল ও বিউটি মন্ডল চারদিনের শিশুকে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে ভর্তি করেন। তিন ঘন্টা পরই তাঁদের শিশুটি মারা যায়। নরেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, “শিশুকে ভর্তি করার প্রায় একঘন্টা পর চিকিৎসক দেখতে আসেন। ভর্তির পরেই চিকিৎসা শুরু হলে শিশুটি বেঁচে যেত।” একই অভিযোগ করেছেন গাজলের সরকার পাড়ার কামনা সরকার। ৬ মাসের শিশু কন্যাকে মঙ্গলবার রাতে মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন কামনা দেবী। বুধবার দুপুর ১২ টা নাগাদ শিশুটি মারা যায়। ২৪ ঘন্টায় ৬টি শিশু মৃত্যুর ঘটনায় কেউ হাসপাতালে বিক্ষোভ না দেখালেও মৃত শিশুদের পরিবার ও তাদের আত্মীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসম্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। মৃত শিশুদের পরিবারের অভিযোগ, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ চালু হলেও এখন পর্যন্ত কোনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। |