রক্তের নমুনা যাবে ‘হু’-তে |
অজানা রোগের জীবাণু ধরা পড়ল না পুণেতেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলকাতা এবং জেলাগুলিতে চিকুনগুনিয়া এবং ডেঙ্গির যৌথ উপসর্গযুক্ত জ্বরের মূলে কী, তা ধরতে পারল না পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিও। ওই রক্তের নমুনা এখন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রেফারেন্স ল্যাবোরেটরিতে পাঠানোর কথা ভাবছে পুণের কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
রোগের উপসর্গের সঙ্গে ডেঙ্গি এবং চিকুনগুনিয়ার মিল রয়েছে। চিকিৎসক এবং পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা বুঝতে পারছেন, মশাবাহিত কোনও পরজীবীর জন্যই রোগটা হচ্ছে। কিন্তু বার বার রক্ত পরীক্ষাতেও কী সেই জীবাণু, তা ধরা পড়ছে না। কলকাতা পুরসভার ক্লিনিক, সরকারি হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল ল্যাবোরেটরি বা কলকাতার কোনও বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ক্লিনিকে রোগের জীবাণু ধরা না পড়ায় রক্তের নমুনা গিয়েছিল স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড এন্টারিক ডিজিজে। তারাও ধরতে পারেনি জীবাণু। তাই নমুনা পাঠানো হয়েছিল পুণের সংস্থাটিতে।
অনেক সময় রক্ত নেওয়ার পদ্ধতিগত ভুলের জন্য রোগ জীবাণু ঠিক মতো ধরা পড়ে না। তাই পুণের এক বিজ্ঞানী গত সপ্তাহে কলকাতায় এসেছিলেন নিজেই রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে। ওই বিজ্ঞানী ২৫টি রক্তের নমুনা নিয়ে যান। বুধবার রাতে পুণের রিপোর্ট কলকাতায় এসেছে। ২৫টি নমুনার মধ্যে ১টি-তে পাওয়া গিয়েছে চিকুনগুনিয়ার জীবাণু। বাকি ২৪টি-র ক্ষেত্রে জীবাণু ধরাই পড়েনি বলে জানিয়েছে পুণের সংস্থাটি।
জীবাণুটি ধরা না পড়ায় ওই রোগ প্রতিরোধ কী ভাবে করা যাবে, তা নিয়ে ধন্ধে রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের অফিসার অসিত বিশ্বাস বলেন, “জীবাণুটা কী তা জানা গেলে মোকাবিলা করা অনেক সহজ হয়। অজানা শত্রুর সঙ্গে লড়াইটা কঠিন। রোগ প্রতিরোধের পরিকল্পনাই তৈরি করা যাচ্ছে না।” এক স্বাস্থ্য-কর্তা বলেন, “ডেঙ্গি এবং চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস বহন করে এডিস প্রজাতির মশা। ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে অ্যানোফিলিস প্রজাতির মশা। নতুন যে রোগটা হানা দিয়েছে, তার জীবাণু অন্য কোনও প্রজাতির মশা বহন করছে কী না তা জানা প্রয়োজন। জীবাণুটি যদি ধরা না পড়ে তা হলে কিছুই করা যাবে না।”
এখন পর্যন্ত ওই জ্বরে রাজ্যে কারও মৃত্যু হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকেরা রোগীকে ভর্তি করিয়ে নিয়েছেন হাসপাতালে। প্যারাসিটামল দিয়ে চিকিৎসা করেই ভাল ফল পাওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ পরিকল্পনা তৈরি করতে জীবাণু এবং তার বাহকের পরিচয় জানাটা জরুরি। পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি জীবাণু ধরতে না পারায় এখন ভরসা হু-র চারটি রেফারেন্স ল্যাবোরেটরি। |