অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
অনগ্রসর শ্রেণি তালিকাভুক্তদের দেওয়া সরকারি ঋণের টাকা আদায়ের ব্যাপারে জলপাইগুড়ি জেল অনেক পিছিয়ে। সরকারি হিসেবে তা রয়েছে শেষ পাঁচটি জেলার মধ্যে। রাজ্যের সব জেলাকে নিয়ে ঋণ পরিশোধের যে তালিকা তৈরি করেছে রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও বিত্ত নিগম, সেই তালিকায় শেষের পাঁচটি জেলার মধ্যে জলপাইগুড়ি রয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় যত ঋণ দেওয়া হয়েছে তার দশ শতাংশও ফেরত পাওয়া যায়নি। সে কারণে জলপাইগুড়িতে নতুন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বুধবার জেলায় ঋণ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে বৈঠক করেন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভীষ্মদেব দাশগুপ্ত। এদিন নিগমের আধিকারিক সহ বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। আজ, বৃহস্পতিবার মালবাজারে জেলার বিভিন্ন মহকুমাশাসক ও বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করবেন নিগমের এমডি।নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু জলপাইগুড়ি জেলা নয়, রাজ্য জুড়েই অনগ্রসরদের দেওয়া সরকারি ঋণ আদায়ের রেখাচিত্র নিম্নগামী। ১৯৯৯ সাল থেকে ঋণ দেওয়ার প্রকল্প শুরু হওয়ার পরে এখনও পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক ঋণ আদায় করা সম্ভব হয়নি। প্রায় ২৭ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। বকেয়া পড়ে থাকার কারণে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণির বাসিন্দাদের নতুন করে ঋণ দেওয়ার জন্য জাতীয় নিগম থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে সমস্যা হচ্ছে। নিগমের এমডি বলেন, “অনেক ঋণ বকেয়া পড়ে রয়েছে। সে কারণে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে ঋণের টাকা আদায় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় গিয়ে বৈঠক করছি। জলপাইগুড়ি জেলার পরিস্থিতি অনান্য জেলাগুলির তুলনায় কিছুটা খারাপ। তবে চলতি বছরে আমরা ঋণ পরিশোধের যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি, তা পূরণ হবে বলে মনে হচ্ছে।” অনগ্রসর শ্রেণির বাসিন্দাদের স্বনির্ভর হওয়ার জন্য অত্যন্ত কম সুদে ঋণ দেয় রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ ও বিত্ত নিগম। কোনও ব্যক্তি অথবা গোষ্ঠী, উভয় ক্ষেত্রেই নিগম ঋণ দিয়ে থাকে। নিগম সুত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ২৭ কোটি টাকাই অনাদায়ী রয়েছে। ঋণের টাকা আদায় না হওয়ার পেছনে দফতরের একাংশের গাফিলতিও রয়েছে বলে সরকারি ভাবে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। সেই ঘাটতি কাটতেই বর্তমানে উদ্যোগী হয়েছে নিগম। ঋণ আদায়ে কমিশনের ভিত্তিতে আদায়ী সংস্থা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে সব ব্যক্তি ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেননি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিগমের এমডি বলেন, “ঋণ আদায়ে সচেতনতা বাড়াতে জোর দেওয়া হচ্ছে। যারা ঋণ নিয়ে শোধ করেননি তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা হবে। তিনি ঋণ ফেরত দিলে যারা তাকে বোঝানোর কাজ করেছেন তাদের বেশি করে ঋণ দেওয়া হবে। চলতি বছরে আমরা সাড়ে ৫ কোটি টাকা ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছিলাম। প্রথম ছ মাসে ২ কোটি টাকা আদায় হয়ে গিয়েছে।” |