নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
কয়েক মাসে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার মতো প্রতারণা সংস্থার প্রলোভনে শহরের বাসিন্দারা যাতে ফের পা না-দেন এই ব্যাপারে প্রচারে নামতে চাইছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের শেষের দিকে এসজেডিএ-র পক্ষ থেকে সভার আয়োজনের পরিকল্পনা হয়েছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের কোন কোন সতর্কতা মেনে চলা দরকার সেটাই তুলে ধরা হবে। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “যা হয়েছে সেটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একটি সমান্তরাল অর্থনীতি চালানোর চেষ্টা। যেটুকু জেনেছি, শহরের কয়েকজন প্রভাবশালী লোককে সামনে রেখে বহু লোককে প্রতারিত করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করছে। কিন্তু লগ্নিকারীদেরও সতর্ক থাকা দরকার। সেই জন্যই ওই আলোচনা সভার কথা ভাবা হয়েছে।” বুধবার শিলিগুড়ির পূর্ব বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ পাল রায় শিলিগুড়ি আদালতে অভিযোগ করেছেন, ধৃত রাজীব ভদ্র-সহ কয়েকজনের পরামর্শে তিনিও মুম্বইয়ের ওই সংস্থায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা লগ্নি করেন। পরে ওই এজেন্টরা তাঁকে দিল্লির একটি সংস্থায় বিনিয়োগের পরামর্শ দেন। এখন রাজীব ভদ্র-সহ কয়েকজন ধরা পড়ায় টাকা ফেরতের ব্যাপারে সংশয়ে। বিশ্বজিৎবাবুর আইনজীবী সন্দীপ মণ্ডল জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে আদালত। উদ্বিগ্ন লগ্নিকারীরা অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রেরও হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের মাধ্যমে তাঁরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টাও করছেন বলে জানা গিয়েছে। লগ্নিকারীদের সচেতন করার ব্যাপারে প্রচারে নামার কথা ভাবছে শিলিগুড়ির পুরসভা। ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মার আশঙ্কা, এই ধরনের সংস্থা পরিকল্পিত ভাবে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ার উদ্যোগ নষ্ট করতে চাইছে। তিনি বলেন, “আশা করছি, দুষ্কৃতীদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে। মেয়র বাইরে রয়েছেন। তিনি ফিরলেই এই ব্যাপারে কথা বলব। প্রয়োজনে পুরসভার তরফেও সচেতনতা বাড়াতে পদক্ষেপ করা হবে।” এদিকে, প্রতারণা মামলায় ধৃত রামশা জীবন সাহেবরাম চৌধুরী, রণবীর দাস এবং দেবব্রত পালকে এ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন শিলিগুড়ির অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের বিচারক সন্তোষ পাঠক। মঙ্গলবারই ওই তিনজনকে হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ। বিচারক রামশা জীবন সাহেবরাম চৌধুরীকে ৫ দিন এবং দু’জনকে ২ দিন করে পুলিশ হেফাজতে রাখার অনুমতি দেন। |