নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
তেলের ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়াল নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) এলাকায়। বুধবার সকাল ১১ টা নাগাদ এনজেপি ফাঁড়ি জাবরাভিটা এলাকার একটি আন্ডারপাসের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। উত্তেজিত বাসিন্দারা ট্যাঙ্কারটিকে ভাঙচুর করেন। বাসিন্দারা আন্ডার পাস লাগোয়া রাস্তাটি অবরোধ করে রাখেন। উত্তেজিত জনতা শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এস জে ডি এ) টোল ট্যাক্স আদায়ের দফতরটিকেও ভাঙচুর করেন। এনজেপি ফাঁড়ি পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম পূর্ণিমা সরকার (১১)। তার বাড়ি দক্ষিণ বারিভাসা এলাকায়। পূর্ণিমা শিলিগুড়ির বাবুপাড়ার জ্যোৎস্নাময়ী হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। সাইকেল নিয়ে রাস্তার ধার দিয়েই সে স্কুলে যাচ্ছিল। মৃতার বাবা সুদেববাবুর জাবরাভিটা এলাকায় একটি ছোট সেলুন রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্ডারপাস লাগোয়া এলাকার রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। ট্যাঙ্কারটি আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাইকেলে ধাক্কা মারলে ছাত্রীটি ছিটকে পড়ে। |
ট্যাঙ্কারের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই পূর্ণিমার মৃত্যু হয়। ট্যাঙ্কারের চালক পালিয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একে তো এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের কার্যত দেখা মেলে না। বড় গাড়ি, ট্রাক, মোটর বাইক প্রচন্ড গতিতে যাতায়াত করে। তার উপরে রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। সন্ধ্যায় পর পর্যাপ্ত আলো থাকে না রাস্তায়। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এলাকার মানুষের রাস্তা, আলো নিয়ে ক্ষোভের কথা শুনেছি। দ্রুত কোনও ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।” এনজেপি থেকে ইস্টার্ণ বাইপাসের দিকে যাওয়ার রাস্তায় জাবরাভিটা এলাকায় আন্ডারপাসটি রয়েছে। এলাকাটি পুরসভার ৩৫ নম্বর এবং ডাবগ্রাম-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমানায় পড়ে। বছর সাতেক আগে এসজেডিএ ওই আন্ডারপাসটি তৈরি করে। নতুন করে তৈরি করা রাস্তাও। আন্ডারপাস উদ্বোধনের পর শুরু হয় টোল ট্যাক্স আদায়। বড় গাড়ি ১০ টাকা এবং ছোট গাড়ি ৫টা হিসাবে টোল আদায় করা হচ্ছে। জাবরাভিটা এলাকার তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বাপি রায় বলেন, “আন্ডারপাসটি একেবারে অবৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি হয়েছে। একে তো সরু, তার উপরে একদিক থেকে গাড়ি ঢুকলে অন্যদিকে দেখা যায় না। এর জেরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এদিন একটি স্কুল ছাত্রীর জীবন গেল।” রাস্তা, আন্ডারপাসের, আলোর পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকার ট্রাফিক পুলিশ কর্মী মোতায়েনের দাবি তুলেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এনজেপি স্টেশন এবং ইন্ডিয়ান অয়েলের ‘টার্মিনাল’-র জন্য দিনরাত এলাকা দিয়ে ট্রাক, ট্যাঙ্কার-সহ সমস্ত রকমের গাড়ি চলাচল করে। সঙ্কীর্ণ রাস্তার দুপাশে ঘন জনবসতি রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ বা পুলিশি নজরদারি না থাকায় দিনের পর দিন দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার যান পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দীও। তিনি বলেন, “বাসিন্দাদের দাবিগুলির যৌক্তিকতা রয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনিক স্তরে দাবিগুলি জানাব। বেহাল রাস্তার জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছে।” |