মানসের বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ দলের মন্ত্রী মনোজের
পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এমনিতেই শরিক তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কে ‘টানাপোড়েন’ চলছে। তারই মধ্যে কংগ্রেসের গোষ্ঠী রাজনীতি ‘উত্তপ্ত’ করতে নতুন ‘ইন্ধন’ যোগাল ‘মনোজ-মানসে’র মন কষাকষি।
মানস হলেন রাজ্যের সেচ, ক্ষুদ্রশিল্প ও বস্ত্রমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। মনোজ, পরিষদীয় ও বস্ত্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী মনোজ চক্রবর্তী। কংগ্রেসের মানসবাবুর বিরুদ্ধে দফতর বণ্টন নিয়ে ‘প্রতারণা’র অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেসেরই মনোজবাবু। দলীয় মহলে মনোজবাবু জানিয়েছেন, বস্ত্র বিভাগের ‘রেশম শিল্পে’র দায়িত্ব ‘স্বাধীন’ ভাবে তাঁকেই দেওয়ার কথা ছিল। সেই মর্মে সরকারি ঘোষণাও হয়েছিল। কিন্তু সরকারি ঘোষণার প্রায় দু’মাস পরে মঙ্গলবার মানসবাবুর সই করা ‘অর্ডার’ দেখেই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন মনোজবাবু। বুধবার দুপুরেই মহাকরণে খোদ মানসবাবুর ঘরে গিয়ে মনোজবাবু সেই নির্দেশের প্রতিলিপি ছুড়ে ফেলে দেন! মানসবাবু তখন তাঁর ঘরে ছিলেন না। কিন্তু মন্ত্রীর দফতরের কর্মীদের সামনেই মনোজবাবু চিৎকার করে অভিযোগ করেন, দফতর বণ্টন নিয়ে তাঁর সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করা হয়েছে! মানসবাবুর দফতরের সচিব ও অন্য কর্মীরা মনোজবাবুকে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। রাগে গজগজ করতে করতে মনোজবাবু ফিরে যান। তাঁকে ‘শান্ত’ করার জন্য মানস-ঘনিষ্ঠ প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতা মনোজবাবুর ঘরে আসেন। তাতে চিঁড়ে ভেজেনি।

মানস ভুঁইয়া

মনোজ চক্রবর্তী
বিষয়টি যাতে ‘আয়ত্তের বাইরে’ চলে না-যায়, সে জন্য পরে মানসবাবু নিজেই ‘উদ্যোগী’ হন। মহাকরণে ফিরে মনোজবাবুকে তাঁর ঘরে ডেকে পাঠিয়ে মানসবাবু কথা বলেন। মনোজবাবুর তাঁর ঘরে যাওয়া এবং তার পর তাঁর ঘরের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে রাতে তাঁকে প্রশ্ন করায় মানসবাবু বলেন, “কিছু জানি না তো! মহাকরণে ফিরে মনোজের সঙ্গে কথা বললাম। বললাম, মনোজ তুমি খুবই করিৎকর্মা ও কাজের ছেলে। রেশম শিল্পটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তুমি মুর্শিদাবাদের ছেলে। মন দিয়ে ওই বিভাগটা দেখ। ও রাজিও হল। এর মধ্যে গোলমাল কোথায় হল!”
মনোজবাবু বলেন, “কী করেছি, তা সংবাদমাধ্যমকে বলব কেন? তবে যা করেছি, তা অন্তরাত্মার টানে করেছি।” ওই বিষয়ে একটা ‘হেস্তনেস্ত’ চান বলে মুর্শিদাবাদে দলের ঘনিষ্ঠদের কাছে তিনি জানিয়েছেন।
মন্ত্রিত্ব পাওয়ার এক মাসের মধ্যে তাঁকে ‘গুরুত্বহীন’ দফতর দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন মনোজবাবু। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। পরিষদীয় দফতরের সঙ্গে মানসবাবুর হাতে থাকা তিন দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও মনোজবাবুকে দেওয়া হয়।
মনোজবাবুর অভিযোগ, সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পরেও তাঁকে দফতর দেওয়ার ব্যাপারে মানসবাবু ‘টালবাহানা’ করেন। তাঁর আরও অভিযোগ, প্রায় দু’মাস পর তাঁকে যে সমস্ত দফতর দেওয়া হয়েছে, তা হয় ‘দেউলিয়া হয়ে যাওয়া’ অথবা ‘অচল’। বিষয়টি জানানোর জন্য তিনি এ দিন পার্থবাবুর ঘরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু পার্থবাবু সেই সময়ে ঘরে ছিলেন না।
কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের অভিমত, প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা মানসবাবুর সঙ্গে মুর্শিদাবাদের জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর সম্পর্ক এমনিতেই অত্যন্ত ‘মধুর।’ তাই, ‘আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ’ বিষয় নিয়ে মানসবাবুর সঙ্গে সংঘাতে গিয়েছেন ‘অধীর-ঘনিষ্ঠ’ মনোজবাবু। অধীর অবশ্য বলেন, “এই ব্যাপারে কিছুই জানি না। এটা এমন কোনও বিষয় নয়। দু’জনে বসে নিশ্চয়ই মিটিয়ে নেবে।”
মানসবাবুও দাবি করেন, ‘‘আমি দফতরের কাজ নিয়ে আলোচনার জন্য মনোজকে ডেকেছিলাম। কে বিরোধের কথা রটাচ্ছে!” মনোজবাবুকে রেশম শিল্প দফতর সামলানোর দায়িত্বও ‘স্বাধীন ভাবে’ই দেওয়া হয়েছে বলে মানসবাবু জানিয়েছেন। কিন্তু মনোজবাবু তাঁর দফতরের আধিকারিকদের কাছে জানিয়েছেন, ‘ত্রুটি সংশোধন’ করে বিজ্ঞপ্তি হাতে না-পাওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁর অবস্থানে ‘অটল’ থাকছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.