দাবি মতো পুজোর চাঁদা না দেওয়ায় তিন ঘণ্টা স্কুলের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠল একটি ক্লাবের সদস্যদের একাংশের বিরুদ্ধে। বুধবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে শালতোড়া ব্লকের বামুনতোড় উচ্চ বিদ্যালয়ে। সন্ধ্যায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা শালতোড়া থানায় গিয়ে এ ব্যাপারে ক্লাবটির কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বামুনতোড় গ্রামে ওই ক্লাব দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিল। পুজোর আগে ওই ক্লাবের কয়েক জন সদস্য বামুনতোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষকের কাছে ২৫১ টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। শিক্ষকরা রাজি হননি। তাঁরা জন প্রতি ১০০ টাকার বেশি দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। এর পরে ক্লাবের ওই সদস্যেরা তাঁদের দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। চাঁদা না নিয়ে তাঁরা চলে যায়।
এ দিন দুপুরে স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে ক্লাবের বেশ কয়েক জন সদস্য ফের পুজোর চাঁদা চাইতে আসেন। এ দিনও শিক্ষকেরা তাঁদের জানিয়ে দেন জন প্রতি ১০০ টাকার বেশি চাঁদা তাঁরা দিতে পারবেন না। এর পরেই উভয় পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়।
স্কুলের শিক্ষকদের অভিযোগ, ক্লাবের সদস্যেরা দাবি মতো চাঁদা পাওয়া যাচ্ছে না দেখে উত্তেজিত হয়ে স্কুলের মূল ফটক বন্ধ করে দেয়। তাঁরা প্রায় ৪০ জন ছিল। দুপুর প্রায় ২টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত স্কুলের ফটকের বাইরে তারা জমায়েত করে থাকে। ভিতরে আটকে পড়েন ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন শিক্ষিকা ছিলেন। বাইরে থেকে ক্লাবের সদস্যেরা শিক্ষকদের হুমকি ও অশালীন মন্তব্য করতে থাকে বলে অভিযোগ। কয়েক জন শিক্ষকের অভিযোগ, থানায় ফোন করে পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করতে আসেনি। বিকেল প্রায় পাঁচটায় আস্তে আস্তে স্কুলের ফটকের সামনে থেকে ক্লাবের সদস্যেরা চলে যান। তারপরেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুল থেকে বের হন।
তাঁরা ঠিক করেন এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ জানাবেন। স্কুল থেকে বেরিয়ে তাঁরা থানায় যান। কয়েক জন শিক্ষকের ক্ষোভ, “আমাদের ওরা অন্যায়ভাবে আটকে রাখল। তারপরে আমরা যখন থানার দিকে যাচ্ছিলাম, সেই সময় ক্লাবের কয়েকজন সদস্য ‘চাঁদা না দিলে স্কুলে আসতে দেবে না, গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না’ বলে আমাদের ফের হুমকি দেয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে নিরাপত্তাহীনতার কারণে পড়াশোনা করানো সমস্যা হয়ে উঠবে। শিক্ষকদের ফোন পাওয়ার পরেও পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করতে যায়নি বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, “পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।” এ দিন চেষ্টা করেও ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |