|
|
|
|
নারায়ণগড়ে আবার গোষ্ঠী-সংঘর্ষ |
সিপিএমের শাখা-বৈঠকে হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর |
সাঁকরাইল, নয়াগ্রামের পর এ বার বেলিয়াবেড়া। অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের উপরে ফের হামলায় অভিযুক্ত শাসকদল তৃণমূল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলিয়াবেড়ার (গোপীবল্লভপুর-২) পেটবিন্ধি অঞ্চলের বাসুদেবপুর গ্রামে এক সিপিএম কর্মীর বাড়িতে দলের শাখাস্তরের বৈঠক চলাকালীন তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। জখম হন ১০ সিপিএম নেতা-কর্মী। গুরুতর জখম তিন জনকে স্থানীয় তপসিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করাতে হয়। হামলাকারীরা ভাঙচুর-লুঠপাট চালায় বলেও অভিযোগ। দু’টি মোটরবাইক ও একটি সাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। জঙ্গলমহলে মাওবাদী মোকাবিলায় নিয়োজিত যৌথ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারীদের কেউ অবশ্য বুধবার পর্যন্ত ধরা পড়েনি। ঝাড়গ্রামের এসপি গৌরব শর্মার বক্তব্য, তদন্ত চলছে।
সোমবারই নয়াগ্রামে যুব কংগ্রেসের সাংগঠনিক শিবিরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত কয়েক জনকে ধরেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তৃণমূলের ‘চাপে’ই আটকদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার আবার সাঁকরাইলের কুলটিকরিতে মিছিল করে এসে তৃণমূলের লোকজন দুই সিপিএম নেতার বাড়িতে এবং সিপিএমের স্থানীয় একটি কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছিল। বেলিয়াবেড়ার ঘটনার পর ঝাড়গ্রাম মহকুমার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সিপিএমের গোপীবল্লভপুর-২ জোনাল সম্পাদক নোটন মল্লিকের অভিযোগ, “সিপিএম করা যাবে না--বলে ফতোয়া দিয়েই ওরা মারধর করেছে।” স্থানীয় সূত্রের খবর, সিপিএমের লোকজনের বাধায় হামলাকারীরা প্রথমে পালালেও কিছুক্ষণ পরেই কয়েকশো লোক সশস্ত্র ভাবে ফিরে আসে। যাঁর বাড়িতে সভা চলছিল, রামেশ্বর মুর্মু নামে সেই সিপিএম কর্মীর অভিযোগ, “আমার বাড়িতে যথেচ্ছ ভাঙচুর, লুঠপাট চালায় ওরা। আমার স্ত্রীকেও নিগ্রহ করে। আমাদের মাটিতে ফেলে পেটাতে থাকে।” তৃণমূলের গোপীবল্লভপুর-২ ব্লক সভাপতি স্বপন পাত্র-র অবশ্য দাবি, “এলাকায় অশান্তি ছড়াতে সিপিএমের লোকজন জড়ো হয়েছে জানতে পেরে এলাকাবাসীই প্রতিবাদ করেছেন।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেই আবার খড়্গপুর-১ ব্লকের কেশপালে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষ বাধে। দু’পক্ষের ৪ জন আহত হন। তাঁদের খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, কাঁসাই নদী সংলগ্ন এলাকায় নতুন একটি বালি খাদান তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূলের মদতপুষ্ট কিছু লোক। সিপিএমের তরফে এর বিরোধিতা করা হচ্ছে। তাই নিয়েই গোলমাল। এলাকায় আগে থেকেই যে খাদানগুলি রয়েছে, তার অধিকাংশই অবৈধ। নদীবক্ষের যেখান-সেখান বালি তোলার ফলে নদী-পাড় ভাঙছে। কৃষি জমিও জলের তলায় চলে যাচ্ছে। ফলে নতুন খাদান তৈরির বিরোধিতা করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
অন্য দিকে, বুধবার দুপুরে নারায়ণগড়ের শিয়ারায় তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তাতে ১২ জন আহত হন। গোলমালে জড়িত অভিযোগে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া কিছু লোকের মিছিল নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। তৃণমূলের পুরনো কর্মীদের সঙ্গে তাদের বচসা বাধে। তার পরেই শুরু হয় হাতাহাতি। |
|
|
|
|
|