দলমার দামালদের তাণ্ডবে নয়াগ্রাম ব্লকের পাতিনা, চাঁদাবিলা ও বড়খাঁকড়ি--এই তিন অঞ্চলের ১০-১২টি গ্রামের ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নয়াগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক দুলাল মুর্মুর আদিবাড়ি পাতিনা অঞ্চলের বড়পাট গ্রামে। বুনো হাতির পাল বিধায়কের গ্রামেও হামলা চালায়। দুলালবাবুর জমির একাংশের ধান খেয়ে সাফ করে দিয়েছে হাতিরা। এলাকাবাসীর পাশাপাশি, খোদ বিধায়কও বন দফতরের দ্বারস্থ হচ্ছেন। বুধবার দুলালবাবু বলেন, “একশো দশটি হাতি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সন্ধে হলেই হাতিরা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে নেমে পড়ছে ধান জমিতে। এখন খেতের ধান পাকছে। হাতিরা খেয়ে ও মাড়িয়ে যথেচ্ছ নষ্ট করছে পাকা-ধান।” বিধায়কের বক্তব্য, “প্রতি বছর এই সময়ে হাতির পাল নয়াগ্রামে আসে। ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য বহু রকম চেষ্টা করেও কোনও সুফল মিলছে না। হাতির হামলা ঠেকানোর জন্য স্থায়ী বন্দোবস্ত জরুরি। এ ব্যাপারে বনমন্ত্রীকে জানাব।” বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ২ নভেম্বর সুবর্ণরেখা পেরিয়ে নয়াগ্রামের চাঁদাবিলা রেঞ্জের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে হাতিরা। ১১০টি হাতির পালে শাবকের সংখ্যা ১৮টি। গত কয়েক দিনে বড়পাট, পচাখালি, রুখনি, চিলিন্দা, পাথরডহরা, কাশিয়া, তপোবন, বিরিবেড়িয়া, কাদোকোঠা গ্রামের বিস্তীর্ণ ধানজমিতে কার্যত তাণ্ডব চালাচ্ছে হাতিরা। এর মধ্যে দিন তিনেক আগে পাথরডহরার জঙ্গলে পালের একটি হস্তিনী একটি শাবক প্রসব করেছে। ফলে অশনি-সংকেত দেখছেন এলাকাবাসী। কারণ, পালে নবজাতক থাকায় হাতিরা সহজে এলাকা ছেড়ে নড়বে না। খড়্গপুরের ডিএফও মিলনকান্তি মণ্ডল-ও মানছেন, “পালে সদ্যোজাত শাবক থাকায় হাতির পালটির এই মুহূর্তে দূরবর্তী এলাকায় যাওয়ার সম্ভাবনা কম।” লোকালয়ে হাতির হামলা ঠেকাতে হুলা জ্বালানোর জন্য গ্রামবাসীদের তেল-মোবিল দেওয়া হচ্ছে বলে ডিএফও-র দাবি। তবে গ্রামবাসীদের বক্তব্য, একশো দশটি হাতিকে খেদানোর জন্য অনেক হুলা (মশাল) জ্বালানো প্রয়োজন। কিন্তু তাঁরা পর্যাপ্ত তেল-মোবিল পাচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, যত শীঘ্র সম্ভব হাতিদের এলাকা-ছাড়া করা হোক। |