বাসের রেষারেষির জেরে ফের দুর্ঘটনা বঙ্কিম সেতুতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফের রেষারেষি। ফের দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থল সেই হাওড়ার বঙ্কিম সেতু। তবে এ বার অল্পের জন্য সেতুর রেলিং ভেঙে নীচে বাস পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন বাসের ২৫-৩০ জন যাত্রী। আহত হয়েছেন তিন জন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুর ২টো নাগাদ হাওড়া স্টেশনের দিক থেকে আসা ধর্মতলা-দানেশ শেখ লেন রুটের একটি মিনিবাস অন্য রুটের একটি মিনিবাসের সঙ্গে রেষারেষি করছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, অন্য রুটের মিনিবাসটি সেতুতে উঠে মোড় ঘোরার সময়ে ধর্মতলা-দানেশ শেখ লেন রুটের বাসটিকে ডান দিক দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে ধাক্কা মেরে পালায়। ধর্মতলা-দানেশ শেখ লেনের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর ডিভাইডারে উঠে একটি বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মারে। আচমকা ধাক্কায় বাসের মধ্যেই ছিটকে পড়ে আহত হন চালকের আসনের পাশে বসে থাকা তিন জন যাত্রী। এক যাত্রীর নাক-ঠোঁট ফেটে যায়। অন্য দু’জনও হাতে ও কোমরে আঘাত পান।
দুর্ঘটনার পরে রক্তাক্ত অবস্থায় হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় অভিজিৎ দত্ত নামে এক যাত্রীকে। |
|
দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। বুধবার। নিজস্ব চিত্র |
একটি মোবাইল পরিষেবা সংস্থার কর্মী অভিজিৎবাবু বসেছিলেন চালকের ঠিক পিছনে। দুর্ঘটনার পরে তিনি মুখ থুবড়ে পড়ে যান। তাঁর নাক ও ঠোঁট ফেটে যায়। মাথায় আঘাত লাগে। অভিজিৎবাবু বলেন, “হাওড়া স্টেশনের কাছ থেকেই দুটো বাস রেষারেষি করছিল। সেতুতে ওঠার পরে মোড় ঘোরার সময়ে ওই বাসটি আমাদের বাসকে পাশ থেকে সজোরে ধাক্কা মেরে পালায়। আমাদের বাস ডিভাইডার টপকে একটি বাতিস্তম্ভে আটকে না গেলে যে কী হত, বলা মুশকিল।”
এর আগে ২০০৭-এর ২৫ অগস্ট একই ভাবে দু’টি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে বৈষ্ণবঘাটা-হাওড়া রুটের একটি বাস সেতুর রেলিং ভেঙে বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজের ছাদে পড়ে। ওই ঘটনায় এক মহিলা যাত্রীর মৃত্যু হয়। জখম হন ১১ জন। সব থেকে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ২০০৯ সালের ৪ জুলাই। সাঁকরাইল-হাওড়া এবং বি গার্ডেন-ধর্মতলা রুটের দু’টি মিনিবাসের মধ্যে রেষারেষিতে সাঁকরাইলগামী মিনিবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে ধাক্কা মারে। তার পরে রেলিং ভেঙে রেলের ওভারহেড তার ছিঁড়ে ৪০ ফুট নীচে লাইনে আছড়ে পড়ে। ওই দুর্ঘটনায় মারা যান ১৫ জন। তার পরে রাজ্য সরকার বাসে বাসে রেষারেষি কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়।
কিন্তু হাওড়ায় পুলিশ কমিশনারেট হওয়ার পরেও রেষারেষির ছবিটা বদলায়নি কেন? হাওড়ার ডিসি (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “সেতুর উপর রেষারেষি বন্ধ করার জন্য সব সময়ে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকে। রেষারেষি করলে এখন কেসও দেওয়া হয়। এ দিন সেতুর উপর পুলিশ ছিল কি না বা থাকলেও পালিয়ে যাওয়া বাসটিকে কেন ধরা যায়নি, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পলাতক বাস ও চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” |
|