আটত্রিশ বছরের ‘বিরতি’-তে ইতি টেনে এক মাসে আইন অমান্যের ‘হ্যাটট্রিক’ করতে চলেছেন বাম নেতারা। লক্ষ্য, বাম ঐক্য বাড়ানো ও বৃহত্তর জোট গড়ে কেন্দ্রীয় সরকারে আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্রতর করা।
কালই দেশ জুড়ে বাম ট্রেড ইউনিয়নগুলির আইন অমান্য হয়েছে। কলকাতায় বামফন্টের তরফে আইন অমান্য হবে ২৮ নভেম্বর। এর মাঝে ফরওয়ার্ড ব্লকের ডাকে আইন অমান্য হবে দু’টি পর্বে। ১৮ নভেম্বর দেশ জুড়ে (কলকাতা বাদে) ও ২১ নভেম্বর কলকাতায়। অন্য বাম দলগুলিও তাতে যোগ দেবে বলে জানান সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। যোগ দেবে বিজু জনতা দল, জেডি(এস), তেলুগু দেশমের মতো কয়েকটি অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি দলও।
ফব-র আইন অমান্য মূলত ২৩ জানুয়ারিকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ ঘোষণা, মুখার্জি কমিশনের রিপোর্ট গ্রহণ, লোকসভার পুস্তিকায় নেতাজি সম্পর্কে ভুল তথ্য সংশোধনের মতো দাবিগুলি নিয়ে। নেতাজিকে সামনে রেখে বাম ঐক্য বাড়ানোর চেষ্টা সম্পর্কে ফব-র সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “রাশিয়ায় লেনিন, চিনে মাও জে দংকে সামনে রেখে বামপন্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। এ দেশে তাঁদের বদলে সুভাষচন্দ্রের মতো জাতীয় নায়ককে সামনে রাখতে হবে।”
একই সঙ্গে বৃহত্তর বাম ঐক্য তৈরিতেও সচেষ্ট প্রকাশ কারাট, এ বি বর্ধন, দেবব্রত বিশ্বাসরা। এই জোটকে সঙ্গে নিয়েই মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ‘আরও তীব্র’ করতে তুলতে চাইছেন বাম নেতারা। যে কারণে ফব-র আইন অমান্যে সামনে রাখা হচ্ছে ইউপিএ সরকারের আর্থিক নীতির বিরোধিতাকেও। আজ নেতাজি সুভাষ ফাউন্ডেশন আয়োজিত নাগরিক সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াইয়ের ডাক দেন কারাট। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেডি, জেডি(এস), তেলুগু দেশমের নেতারা। কারাট সেখানে দাবি তোলেন, “পেট্রোলের দাম ফের সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।” পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, “জি২০ সম্মেলনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, অন্যান্য পেট্রোপণ্যের দামও সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হবে। ২০টি দেশের ওই গোষ্ঠীতে ভারতের মুদ্রাস্ফীতির হারই সব থেকে বেশি। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ভর্তুকি থাকবে না, বাজারই ঠিক করবে অত্যাবশক পণ্যের দাম। মনমোহন সরকারের এই ভুল আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে আরও একজোট হয়ে লড়তে হবে।” |