‘বঞ্চনায়’ ক্ষোভ
শিলচরের প্র্যাক্টিসিং স্কুলের একশো বছর
পায়ে পায়ে দীর্ঘ একশো বছর। কিন্তু শতবর্ষ উদযাপনের ক্ষণেও শিলচরের কালীমোহন গভর্নমেন্ট প্র্যাক্টিসিং স্কুলের দৈন্যদশা চাপা থাকল না। শনি-রবি দু’ দিন নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হল এই প্রাচীন বিদ্যায়তনের শতবর্ষ। এসেছিলেন এলাকার মান্যগণ্য বিশিষ্টজনেরা। আর সেই অনুষ্ঠানে হাজির থেকে তাঁরা আঁচ পেলেন ক্ষোভের। বিজেপি সাংসদ কবীন্দ্র পুররকায়স্থ, কংগ্রেস বিধায়ক রুমি নাথ ও বিদ্যালয় সমূহের উপ-পরিদর্শক জওহরলাল রাইকে শতবার্ষিকী মঞ্চে বসিয়েইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ভুবনপ্রসাদ কৈরি উগরে দিলেন অন্তরের ক্ষোভ। জানালেন কী ভাবে দিনের পর দিন অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠান। জানালেন, অন্যান্য স্কুল সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পে দালানকোঠা নির্মাণের মঞ্জুরি পেলেও সেই সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত এই স্কুল।
১৯১১ সালে ব্যতিক্রমী স্কুল হিসাবেই গড়ে ওঠে এই প্রতিষ্ঠান। শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য ১৯০৬ সালে যোরহাটে রাজ্যের প্রথম নর্মাল স্কুলের সূচনা। পরের বছর অন্যটি শিলচরে গড়ে ওঠে। প্রশিক্ষণ চলাকালে শিক্ষকদের প্রাক্টিক্যাল ক্লাসের জন্য একটি স্কুলের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তখন প্রাক্তন মন্ত্রী ও পুরপ্রধান সতীন্দ্রমোহন দেব তাঁর পিতা কালীমোহন এবং জ্যাঠামশাই শরৎমোহন দেবের নামে স্কুলটি গড়ে তোলেন। সতীন্দ্রমোহনের ছেলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবও প্রাথমিক শিক্ষা নেন এই স্কুলেই। শিলচরের বর্তমান সাংসদ কবীন্দ্র পুরকায়স্থও চাকরি জীবনে নর্মাল স্কুলে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে এই স্কুলে ক্লাস করিয়েছেন। কিন্তু সেই নামী স্কুলে এখন ঘরগুলির মেঝে ফেটে চৌচির। দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। পানীয় জলের বন্দোবস্ত নেই। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি মিলিয়ে ছাত্রসংখ্যা ১১৪। শিক্ষক-সংখ্যা প্রধান শিক্ষক-সহ পাঁচ। নেই কোনও বিজ্ঞান শিক্ষক। ২০০৭ সালে হিন্দি শিক্ষক বদলির পর সে জায়গায় আর কাউকে পাঠানো হয়নি। এমনকী ২০০৫ সালে চৌকিদারের মৃত্যুর পর নেওয়া হয়নি অন্য চৌকিদারও।
সাংসদ কবীন্দ্রবাবুর বক্তব্য, এতদিন ধরে এই স্কুল যে এ ভাবে পড়ে আছে সেটাই লজ্জার ব্যাপার। সরকার এর দায় এড়াতে পারে না। বিধায়ক রুমি জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে কথা বলবেন।
উপ-পরিদর্শক জওহরলাল রাই জানান, দুটি অতিরিক্ত ক্লাসঘর তৈরির জন্য তাঁরা সর্বশিক্ষা অভিযানে প্রকল্প পাঠিয়েছেন। এই স্কুলে বিজ্ঞান শিক্ষক পাঠানোর জন্য তিনি সরকারের কাছে চিঠি লিখবেন।
এই স্কুল এত সমস্যায় ভুগছে কেন? সর্বশিক্ষা মিশনের ডিস্ট্রিক্ট প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার সাইদুর লস্কর জানান, প্র্যাক্টিসিং স্কুলগুলি সাধারণ স্কুলের মতো নয়। ফলে কিছুটা জটিলতা আছে। কিছু প্র্যাক্টিসিং স্কুল অধিকর্তা কার্যালয় থেকে সরাসরি নিয়ন্ত্রিত হয়। কিছু আবার জেলা পর্যায়ে দেখভাল হয়। তবে এই প্র্যাক্টিসিং স্কুলে তাঁদের অথর্ ব্যয়ের সুযোগ থাকলে প্রকল্প দেখে তা মঞ্জুরের চেষ্টা করবেন তিনি দু’দিন ধরে পালিত হল শতবাষির্কী কর্মসূচি। প্রাক্তন শিক্ষক ও প্রাক্তন ছাত্র সংবর্ধনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে ছিল চিত্র ও কারুকার্য প্রদর্শনীও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.